ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

ভারত

রোমাঞ্চে ভরা কলকাতার সায়েন্স সিটি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
রোমাঞ্চে ভরা কলকাতার সায়েন্স সিটি! রোমাঞ্চে ভরা কলকাতার সায়েন্স সিটি

কলকাতার সায়েন্স সিটি ঘুরে: ভৌতিক অন্ধকার। গা ছম ছম করছে। এরইমধ্যে হঠাৎ আলোর ঝলকানি। মাথা তুলে মুখ হা করে হুঙ্কার দিচ্ছে ডায়নোসর। একইভাবে সুর তুলে এগিয়ে আসছে বিশাল আকৃতির বন্য হাতি। পাখির কলতান আর নানা ধরনের বন্যপ্রাণীর সমারোহে মনে হবে এক রোমাঞ্চকর পরিবেশ। কলকাতার সায়েন্স সিটিতে ঢুকলে এমন পরিবেশের সম্মুখীন হতে হবে যে কারো। 

এটি মূলত একটি বিজ্ঞান সংগ্রহশালা ও বিজ্ঞানকেন্দ্রিক বিনোদন উদ্যান। কলকাতাবাসীর কাছে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করে তোলার উদ্দেশ্যে এটি তৈরি করা হয়।

পূর্ব কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস ও জে বি এস হ্যালডেন অ্যাভেনিউ’র সংযোগস্থলে ৫০ একর জমির ওপর সায়েন্স সিটি অবস্থিত। যা ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে নির্ধারিত টিকিটের বিনিময়ে এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।  

সায়েন্স সিটি দু’টি ভাগে বিভক্ত। একটি  সায়েন্স সেন্টার  (বিজ্ঞান কেন্দ্র), অন্যটি কনভেনশন সেন্টার (সম্মেলন কেন্দ্র)। মজার ও শিক্ষামূলক প্রদর্শনী ও নিদর্শন রাখা হয়েছে বিজ্ঞান কেন্দ্রে। রোমাঞ্চে ভরা কলকাতার সায়েন্স সিটিযেগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্পেস এক্সিবিউশন, ডায়নামোশেন, আর্থ এক্সপ্লোরেশন, মেরিটাইম সেন্টার ও সায়েন্স পার্ক। এসবের প্রতিটি বিভাগও আবার বিভিন্ন বিজ্ঞান চিত্র প্রদর্শনী, থ্রিডি প্রদর্শনী ও চলচ্চিত্র নাট্যানুষ্ঠানস্থল।  

সম্মেলন কেন্দ্রটি জমায়েতের জন্য বিপুল পরিমাণ সুসজ্জিত জায়গার সমন্বয়ে গঠিত। যেখানে ২০ হাজারেরও বেশি আসনবিশিষ্ট একটি নাট্যমঞ্চ রয়েছে। একটি মিনি অডিটোরিয়াম রয়েছে যেখানে প্রায় ৪০০ জন বসতে পারেন। ১১টি সভাগৃহসহ একটি সেমিনার সভাঘর রয়েছে। যেগুলোর ধারণক্ষমতা ১৫ থেকে ১০০ জন।

ক্যাবলকার, মোনো সাইকেল, ক্যাটার পিলার, গ্যাভিসিটি কশটার, রোড ট্রেনে করে ঘুরে সায়েন্স সিটি দেখার সুযোগ করেছে এখানে। রোমাঞ্চে ভরা কলকাতার সায়েন্স সিটি 

সায়েন্স সিটিতে একটি বিশাল পিকনিক স্থল রয়েছে। যেখানে বাড়ি থেকে খাবার এনে আনন্দ উপভোগের ব্যবস্থা রয়েছে।  

১ হাজারের বেশি গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থাকায় সায়েন্স সিটিতে গাড়ি পার্কিং নিয়ে কাউকে চিন্তা করতে হবে না।
 
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের ইভার সাইন একাডেমির ছাত্রী ফেরদৌসী বেগম বাংলানিউজকে বলেন, কাকার সঙ্গে ঘুরতে এসে খুব ভালো লেগেছে। ক্যাবলকারে ঘুরেছি, ডায়নোসর, আদি মানুষ দেখে খুব মজা পেয়েছি। অনেক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছে সায়েন্সের বিভিন্ন বিষয় দেখতে পেরে।  

রোমাঞ্চে ভরা কলকাতার সায়েন্স সিটিবাংলাদেশ থেকে আসা আব্দুল্লাহ বলেন, যারা আগে কলকাতায় এসেছেন তারা এখানের গল্প বলেছেন। তাদের কাছে শুনে এটা দেখতে আসার খুব ইচ্ছা ছিলো। কলকাতায় এসে তাই সায়েন্স সিটি দেখতে এসেছি। এটা না দেখে গেলে মনে হতো কলকাতা সফর অসমাপ্ত রয়েছে।

টিকিট কাউন্টারের প্রদীপ বলেন, শুধুমাত্র ভারতবর্ষের মানুষ নয় দেশ-বিদেশের হাজারও মানুষ প্রতিদিন সায়েন্স সিটিতে আসেন। বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার পাশাপাশি আনন্দ উপভোগ করেন। রোমাঞ্চে ভরা কলকাতার সায়েন্স সিটি 

সায়েন্স সিটির তথ্য সেবা কেন্দ্রের দায়িত্বরত তথ্য কর্মকর্তা রত্না দাস বাংলানিউজকে জানান, সায়েন্স সিটিতে টিকিটের মূল্য ব্যক্তি বিশেষের জন্য ভিন্ন ভিন্ন। এখানে একজনের প্রবেশ মূল্য ৪০ টাকা। এরপর রোড ট্রেন ১৫ টাকা, স্পেস থিয়েটার ৬০ টাকা, গ্রাভিটি কোস্টার ৩০ টাকা, টাইম মেশিন ২০ টাকা, মোনো সাইকেল ১৫ টাকা, ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনী ৩০ টাকা, রোপওয়ে ৪০ টাকা+ পরিষেবা কর, সায়েন্স অন স্ফিয়ার ২০ টাকা, প্যানোরমা শো অন হিউম্যান ইভোল্যুশন ৬০ টাকা, ইভোল্যুশন অব লাইফ- ডার্ক রাইড ৪০ টাকা, প্যানোরমা শো অন হিউম্যান ইভোল্যুশন+ইভোল্যুশন অব লাইফ- ডার্ক রাইড (কম্বো টিকিট) ৮০ টাকা।

বিশেষ সুবিধা ২০ জন ও তার বেশি সংগঠিত দলের জন্য জন প্রতি প্রবেশ ৩০ টাকা। রোপওয়ে ৩০ টাকা+ পরিষেবা কর, স্পেস থিয়েটার ৫০ টাকা, ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনী ২৫ টাকা।

তিনি জানান, সায়েন্স সিটি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
এমআরএমে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।