ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফের কাঁপলো কলকাতার রাজপথ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফের কাঁপলো কলকাতার রাজপথ রোহিঙ্গা ইস্যুতে কলকাতায় মিছিল। ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার অপর নাম 'মিছিল নগরী'। বিশ্বে যখন যেখানে অন্যায়-অত্যাচার হয়েছে, প্রতিবাদে মিছিলের মধ্য দিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে কলকাতা। এই কলকাতা ভিয়েতনামের যুদ্ধে পাশে আছি বলে জানান দিয়েছিল। ক্ষোভ দেখিয়েছিলো  সাদ্দামে ফাঁসির বিরুদ্ধে। পাশে ছিলো শাহবাগ আন্দোলনেও।

এবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর লাগাতার গণহত্যার বিরুদ্ধে ফের গর্জে উঠল কলকাতা।

রোহিঙ্গাদের নির্বিচার হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) কলকাতায় পথে নেমেছিলো ১৭টি অরাজনৈতিক সংগঠন।

যার নেতৃত্বে ছিলো বঙ্গীয় ইমাম পরিষদ।

এই মিছিলে ক্ষোভ উগরে পড়ছিলো মিয়ানমার সরকার ও অং সান সুচি’র বিরুদ্ধে। রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধে দেওয়া হচ্ছিলো আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপের দাবিতে শ্লোগান।

'ভাষা ও চেতনা সমিতি'র সম্পাদক ইমানুল হক বলেন, বিভিন্ন সংগঠনসহ কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছে। আমরা পার্ক সার্কাস থেকে মিছিল করে মিয়ানমারের দূতাবাস ঘেরাও করবো। যে ভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যায় মেতেছে মিয়ানমার, তাতে তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কলকাতায় মিছিল।  ছবি: বাংলানিউজমিয়ানমার সরকার মানুষকে মানুষের মর্যাদা না দিলে আগামী দিনে আরো বড়ো আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

তিনি আরো বলেন, ভারতের সংবিধানে ১৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো দেশ থেকে নির্যাতিত হয়ে কেউ যদি ভারতে আশ্রয় চায়, তাকে অবিলম্বে আশ্রয় দিতে। তবে আশ্রয়কারীরা কোনো রাষ্ট্রদোহী আন্দোলন করতে পারবে না, বা মদত দিতে পারবে না। এর আগে কি ভারতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া হয়নি? তাহলে এখন কেনো তাদের আশ্রয় দেওয়া হবে না? রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আর কিছু চায়নি। তারা চেয়েছে একটু নিরাপত্তা, আর দুবেলা দুমুঠো ভাত। এতে কেন্দ্রীয় সরকার এতো অমানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে কেনো? পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদার ও মায়ের মত মানবিকতা দেখিয়েছেন। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই।


'বন্দি মুক্তি কমিটি'র সম্পাদক ছোটন দাস বলেন,  মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের যখন মেরে তাড়াচ্ছে, তখন ভারতের মোদি সরকার চুপ। অথচ আবার বাংলাদেশে ত্রাণ পাঠাচ্ছে। এই দ্বিচারিতার কারন কি? সরাসরি বলুক মিয়ানমার সরকারকে এই নিপীড়ন বন্ধ করতে এবং রোহিঙ্গা জনগণকে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে।


আং সান সুচি যখন দীর্ঘদিন গৃহবন্দি ছিলেন, সেই সময়ে তার মুক্তির দাবিতে  কলকাতাতেও বহু মিছিল- সমাবেশ হয়েছে। তার অনেকগুলোতেই হাজির ছিলেন মানবাধিকার কর্মী ছোটন দাস। তিনি বলছিলেন, যার মুক্তির দাবিতে ওইসব মিছিল মিটিং করেছিলাম, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেই নেত্রীরই ভূমিকা দেখে এখন লজ্জা হয়।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কলকাতায় মিছিল।  ছবি: বাংলানিউজস্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশনসহ ১৭টি অরাজনৈতিক  ও মানবাধিকার সংগঠন মঙ্গলবারের বিক্ষোভে সামিল হয়।

দুপুর একটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতায় পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিয়ানমারের উপদূতাবাসের সামনে জড়ো হওয়া কথা থাকলেও পরে কলকাতা পুলিশ বালিগঞ্জের সামনে মিছিল রুখে দেয়।

সেখান থেকে ইমানুল হক, ছোটন দাসসহ কয়েক জন পুলিশের গাড়ি করে মিয়ানমারের উপদূতাবাসে স্মারক লিপি জমা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।