ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মিয়ানমারের ইলিশে কলকাতার বৈশাখ!

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৮
মিয়ানমারের ইলিশে কলকাতার বৈশাখ! মিয়ানমারের হিমায়িত ইলিশ

কলকাতা: পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালির উৎসব, একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়, নতুন পোশাক আর পেটপুরে খাওয়া। এটা বাঙালির চিরাচরিত ঐতিহ্য। ঐতিহ্যিক খাওয়া-দাওয়ায় পান্তা-চিংড়ি থাকলেও আধুনিক সমাজে সেটা হয়ে গেছে পান্তা-ইলিশ। তাই প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পাতে ইলিশ খোঁজে বাঙালি। 

পদ্মার ইলিশপ্রিয় কলকাতাবাসীর জন্য এবার কোনো সুখবর নেই। ঢুকছে না বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ।

দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে তাই  নববর্ষ উপলক্ষে মিয়ানমার থেকে প্লেনে চড়ে টাটকা ইলিশ আসছে কলকাতায়। রাজ্য মৎস্যদপ্তর ও ফিশ ইম্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যাচ্ছে এমন তথ্য।
 
২০১২ সাল থেকে পশ্চিমবাংলায় পদ্মার ইলিশ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রতিবছর কলকাতায় জামাইষষ্ঠীতে বাংলাদেশ থেকে ইলিশের আমদানি শুরু হতো। চলতো একেবারে দুর্গাপূজা পর্যন্ত। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের নতুন মৎস্যমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণাও করেছিলেন। তাতে হাসি ফুটেছিল পশ্চিমবাংলার ভোজন রসিকদের। কিন্তু তা এখনও কার্যকর না হওয়ায় পদ্মার ইলিশের স্বাদ থেকে এবারও বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে পশ্চিমবাংলাকে।
 
পহেলা বৈশাখে যে পদ্মার ইলিশ ঢুকবে না তা আগাম টের পেয়েছিলেন রাজ্যের ইলিশ আমদানিকারকরা। গত বর্ষার শেষের দিকে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ উঠেছিল পশ্চিমবাংলায়।  ওই সময় প্রচুর ইলিশ হিমঘরেও সংরক্ষিত করে রাখা হয়। আবার গত বর্ষায় বড় সাইজের ইলিশ মিয়ানমার থেকে জাহাজে করে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই সময় খোলা বাজারে কিছু বিক্রি হলেও মিয়ানমারের ইলিশও এ রাজ্যের হিমঘরে সংরক্ষিত করে রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা।
মিয়ানমারের হিমায়িত ইলিশ 
রাজ্যের ফিশ ইম্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (হিলসা) সভাপতি অতুলচন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের মৎস্যমন্ত্রী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে সে দেশের সরকারের ঘরে প্রস্তাব দিয়েছেন মাত্র, অফিসিয়ালি এখনও নিষেধাজ্ঞা ওঠেনি। তাই পদ্মার ইলিশ এবারও আসছে না। এমনকী পহেলা বৈশাখে বাংলাদেশে পান্তাভাতের সঙ্গে যে ইলিশের উৎসব হতো, তাও বন্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। যাতে এখন কেউ ছোট ইলিশ বা জাটকা না ধরে।
 
তিনি আরও বলেন, আমাদের রাজ্যে উৎপাদিত ইলিশ প্রায় ২৫০ টন এবং মিয়ানমার থেকে আমদানি করা ইলিশ প্রায় ২৫০ টন মিলিয়ে হিমঘরে মোট ৫০০ টন ইলিশ মজুদ রয়েছে। এছাড়া শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনে করে আমরা সন্ধ্যায় দু’টন টাটকা ইলিশ কলকাতায় নিয়ে আসছি।  

পশ্চিমবঙ্গে পহেলা বৈশাখ (১৫ এপ্রিল) রোববার। হিমঘরে সঞ্চিত মিয়ানমারের বড় ইলিশ কেজিপ্রতি প্রায় ১১শ থেকে ১৩শ টাকা দরে এবং মিয়ানমারের টাটকা ইলিশ কেজিপ্রতি ১৩শ থেকে ১৫শ রুপি দরে বিক্রি হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪  ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৮
ভিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।