ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

কলকাতার গণমাধ্যমকর্মীদের ভাবনায় বাংলাদেশের নির্বাচন

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
কলকাতার গণমাধ্যমকর্মীদের ভাবনায় বাংলাদেশের নির্বাচন প্রতীকী ছবি

কলকাতা: একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই সরগরম বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ। জোটের ভোটে আসন ভাগাভাগি নিয়েও চলছে তোড়জোড়। মনোনয়ন পেতে প্রার্থীদের চলছে দৌড়ঝাপ। 

বাংলাদেশে সর্বসাধারণের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ ভারতের নাগরিকরাও ভাবছেন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে। একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা হয় কলকাতার প্রথমসারির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে।

প্রতিবেশী দেশের নির্বাচন নিয়ে কলকাতার সংবাদকর্মীদের চিন্তা-ভাবনা, আলাপ-আলোচনা বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।

কলকাতা দূরদর্শনের সিনিয়র সাংবাদিক ও কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ শুর নির্বাচন বলেন, বছর শেষে বাংলাদেশে নিবার্চন হবে এবং আগামী বছরের প্রথমার্ধে ভারতে নির্বাচন। এখন এটা একটা সভাপতন। দুটি দেশের নির্বাচন একটু আগে পরে হচ্ছে। কিন্তু এ দুটি দেশ প্রতিবেশী দেশ। নির্বাচনে ফলাফল সেই দেশের জনগণ ঠিক করে এটা প্রতিবেশী ঠিক করে না। বাংলাদেশ এখন উন্নয়শীল দেশ। আমি আশাবাদী উন্নয়নের ধ্বজা ধরে রাখতে বাংলাদেশের মানুষ সঠিক সরকার নির্বাচিত করবে।

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বাংলা ভার্সন ‘এই সময়’-এর সাংবাদিক অমল সরকারের কাছে নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেকোনো শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ নিশ্চয়ই চাইবেন এমন একটা সরকার হোক যারা সব মানুষকে নিয়ে চলতে পারে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের মানুষ সেরকম একটা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তারা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। এটা খেয়াল রাখতে হবে, আমার প্রতিবেশীর বাড়িতে যদি আগুন লাগে সেই আগুনে আমি যদি নাও পুড়ি আগুন থেকে যে ধোঁয়া বের হবে, সেই দূষণ থেকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরতে পারি। ফলে সরকারটা এমন হতে হবে, আমার এবং আমার পরিজন ও আমার প্রতিবেশী সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।

কলকাতার সংবাদমাধ্যমে প্রতিদিনই বাংলাদেশের খবর থাকছে। আগে এতটা দেখা যেত না, এ পরিবর্তনের কারণ কী? উত্তরে আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক ঋজু বোস বলেন, আমি বলব গত কয়েক বছরে ভারত তথা কলকাতার মানুষ এবং বাংলাদেশ মানুষ প্রযুক্তিগত কারণে অনেকটা কাছাকাছি চলে এসেছে। এর ফলেই বাংলাদেশের খবর কলকাতার পত্রিকাগুলোয় বেশি করে আসছে। সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে আমরা দুই দেশ একসাথে আড্ডা দিচ্ছি, ঝগড়া করছি, খুনসুটিও করছি। তাই কলকাতাবাসীর আগ্রহ বাড়ছে বাংলাদেশের খবরে। এখানকার গণমাধ্যমেরও তাই দায় রয়েছে বাংলাদেশের খবর তুলে ধরার।

বাংলাদেশের জন্ম আমাদের উপমহাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত ইতিবাচক ঘটনা। সম্প্রীতির মনোভাব নিয়ে এবং সাম্প্রদায়িকতা ছুড়ে ফেলে দেশটির জন্ম হয়েছিলো, সেই দেশে সংস্কৃতির বহুত্ব আছে। সেই বহুত্বকে বজায় রাখতে তারা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমার মনে হয়, এই বহুত্ব বজায় রাখাটা শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারতের কাছেও একটা চ্যালেঞ্জ, যোগ করেন ঋজু বোস।

ইংরেজি দৈনিক টাইসম অফ ইন্ডিয়ার সাংবাদিক দেবাশীষ কোনারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো ,বাংলাদেশে কেমন সরকার চান? জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতন্ত্রপ্রেমী সরকার আবার আসুক। সেটাই আমাদের সবসময় কাম্য। আমরা আশা করব যে সরকার ছিলো সেরকমই একটা গণতন্ত্রপ্রেমী সরকার আসুক এবং যারা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সহায়তা দেবে না।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মা-মাটি-মানুষ পত্রিকার সম্পাদক সুকুমার সরকার বলেন, আমরা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট উত্তেজিত! অনেকদিন পর সব দল নির্বাচনে এসেছে। ও দেশ নিয়ে যথেষ্ট কনসার্ন থাকি। সেদিক থেকে যদি দেখেন, তাহলে বলব, কে আসবে বড় কথা নয়। এটা বাংলাদেশের মানুষ ঠিক করবে। তবে যেই আসুক সে আমাদের বন্ধু সরকার হবে এবং ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখবে। গত সরকারের সময় যেরকম সন্ত্রাসবাদ নিয়ে জিরো টলারেন্স দেখেছি, সেরকম এক সরকার ফের আসুক বাংলাদেশের মাটিতে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।