ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গে প্রকাশ্য হয়ে পড়ছে বিজেপির অন্তর্কোন্দল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
পশ্চিমবঙ্গে প্রকাশ্য হয়ে পড়ছে বিজেপির অন্তর্কোন্দল

কলকাতা: ভারতের আসন্ন জাতীয় সংসদ (লোকসভা) নির্বাচন ঘিরে প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপির অন্তর্কোন্দল। মনোনীত ও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দূরত্ব ও দ্বৈরথের ছাপ পড়ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। জেলায় জেলায় লোকসভা আসনগুলোতে দেখা যাচ্ছে অসন্তোষ। 

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের প্র্রার্থী তালিকা সবার আগে প্রকাশ করে চমক দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অনেক গুঞ্জনের পরও জোটগতভাবে ভোটে যেতে একমত না হওয়ায় বাম ও কংগ্রেস প্রায় সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয়।

কিন্তু বিজেপি এখন পর্যন্ত মাত্র ২৮টি আসনে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে পেরেছে। আর এই ২৮ জন ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে কলহ এসে পড়ছে প্রকাশ্যে।

হুগলি আসনে অভিনেত্রী লকেট চ্যাটার্জি প্রার্থী হওয়ার বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠক এরইমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। হুগলি এবং শ্রীরামপুর আসনের মনোনীত প্রার্থী পার্টি অফিসে গেলেও প্রথম সারির একাধিক নেতারই দেখা পাননি বলে জানা গেছে। এছাড়া রাজ্যের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে একাধিক আসনে বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রচারও চোখে পড়ছে।  

সব মিলিয়ে ভোটের কাউন্টডাউন শুরুর আগেই অন্তর্দ্বন্দ্বে বিজেপি শিবির জেরবার হলেও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলছেন, দল বড় হলে এ ধরনের ক্ষোভ-বিক্ষোভ জন্মায়। অন্য দল থেকে আসা নেতাদের মেনে নিতে প্রাথমিকভাবে অসুবিধা হয়। কিন্তু শৃঙ্খলা-পরায়ণ দল হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাকে প্রার্থী করবে, তাকেই মেনে নিতে হবে।

যদিও এই অন্তঃদ্বন্দ্ব ‘স্বাভাবিক’ মনে হচ্ছে না অনেকের কাছে। কোচবিহার আসনে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে নিশীথ প্রামাণিকের নাম ঘোষণা হতেই জেলা কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধদের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। কার্যালয় ভাঙচুরের পাশাপাশি জেলা সভাপতির গাড়িতেও ভাঙচুর চালায় একদল কর্মী।  

বসিরহাটে প্রার্থী হিসেবে সায়ন্তন বসুকে চাইছেন না সেখানকার দলীয় কর্মীরা। এনিয়ে সেখানে পোস্টারও ছড়িয়েছে। আবার কাঁথি আসনে পদ্ম শিবিরের প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্করকে বদলে অন্য প্রার্থী দেওয়ার দাবিও উঠেছে।

আলিপুরদুয়ার আসনে জন বারলাকে নিয়েও ক্ষোভ ঢাকা যায়নি। আর গতবারের জেতা আসন দার্জিলিংয়ে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।

জানা গেছে, কলকাতায় বিজেপির রাজ্যের প্রধান কার্যালয়ে চলে আসছেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা। শীর্ষ নেতৃত্ব না থাকলেও হাতের সামনে তারা যাকে পাচ্ছেন, তার কাছেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। দলের এক রাজ্য সম্পাদক স্বীকার করেন, জেলার একাধিক প্রার্থীর নাম নিয়ে আপত্তি রয়েছে। যদিও যতোটা সম্ভব বিক্ষুব্ধদের বুঝিয়ে সাংবাদমাধ্যমের নাগাল থেকে দূরে রাখার মরিয়া চেষ্টা চলছে।

একদিকে এখনো সব কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে না পারা, অন্যদিকে দলের কোন্দল বাইরে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপির নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষাপটে দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হতাশা দেখা যাচ্ছে। বিরোধীপক্ষ এই হতাশার ফায়দা তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৯
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।