ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

চীনা সম্প্রদায় হলেও আমরা ভারতীয়, চায়না টাউনের আবেদন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
চীনা সম্প্রদায় হলেও আমরা ভারতীয়, চায়না টাউনের আবেদন বিক্ষোভ কর্মসূচি

পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা ভারত-চীন সীমান্ত এখন উত্তপ্ত। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর গত সোমবার (১৫ জুন) দুই দেশের সেনা সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ২০ জন ভারতীয় সেনার। এরপরই চীনাদের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছিল। ধীরে ধীরে খুব উত্তেজনা পরিবর্তিত হচ্ছিল। প্রকাশ্যে নেতা, মন্ত্রী, সাধারণ জনতা সবাই চীনা পণ্য ও ব্যবসা বয়কটের ডাক দিয়েছেন।

অপরদিকে ভারতে থাকা চীনাদের সিংহভাগ থাকেন কলকাতায়, টেরিটি বাজার ও ট্যাংরা এলাকায়। এর আগে করোনার কারণে বারবার আঙুল তোলা হচ্ছিল তাদের দিকে।

আর এখন চীনা পণ্য ও খাদ্য বয়কট দেশজুড়ে। ফলে কলকাতায় বসবাসকরী চীনাদের মনেও চোরা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

তাই কলকাতায় প্রায় ষাটের দশক থেকে চায়না টাউনে বসবাসকারী চীনা বংশোদ্ভূতরা জানালেন, যে তারা বংশ পরস্পর চীনা সম্প্রদায় হলেও আদতে তারা ভারতবাসী। তাই শনিবার হাতে ভারতের পতাকা, মুখে ভারত মাতা কী জয়ের স্লোগান তুলে নিহত ২০ সেনা প্রতি সমবেদনা জানালেন চায়না টাউনের বসবাসকারী চীনা সম্প্রদায়ের মানুষেরা।

চীন সরকারের বিরুদ্ধে এই দিন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন মমতার সরকারের স্থানীয় বিধায়ক জাভেদ খানের পুত্র ফয়েজ খান। চায়না টাউনের চীনা বাসিন্দাদের শহরের রাজপথে এমনই প্রতিবাদের অবাক হয়েছেন পথচলতি মানুষেরা।

প্রচারে অংশগ্রহণ করা চাইনিজ ইউথ ক্লাবের সম্পাদক খোই কুই বললেন, এখানে অংশগ্রহণ করা ১১০ জন সদস্যই চীনা বংশোদ্ভূত। আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না। এক ভ্রাতৃত্ব সম্পর্কে আমরা কলকাতায় বসবাস করি।

বিষয়টি নিয়ে রাজ্য বিজেপির নেতারা বলেন, আমরা চীনা সরকারের আগ্রাসনের বিরোধিতা করে চীনা ব্যবসা ও পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছি। চীনা মানুষদের প্রতি আমাদের কোনো ঘৃণা নেই। আর চায়না টাউনে চীনারা যে ভারতীয় এটা সবাই জানে। অবশ্য তাদের অনেক আত্মীয় চীনে থাকেন। এমনকি এদের মধ্যে অনেকেই চীনে যাতায়াত আছে। তবুও এরা ভারতীয়। আমরা কোনোদিন এদের ভারতবাসী ছাড়া অন্য চোখে দেখিনি। দিদি (মমতা) এদেরকে সামনে এনে কি বোঝাতে চাইছেন জানি না। আমরা দেশপ্রেমের কথা বলছি ওরা (মমতা) রাজনীতি করছে।

এছাড়া জানা গেছে, ওই দিন চীনা সম্প্রদায়কারী আরেক দল মিছিল করে কলকাতায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তাদের প্রতিবাদের ভাষা ছিল ভারতীয়দের মতই। প্রত্যেকের হাতে ছিল বাংলা, ইংলিশ ও চাইনিজ ভাষায় প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার। সেসব নিয়ে চীনা সরকারের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করেন। এদের মধ্যে অনেকেরই হাতে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। স্লোগান ছিল বন্দেমাতরম, ভারত মাতা কী জয়।

পাশাপাশি তারা জানান দেন, যুদ্ধ নয় শান্তি চাই। এবং লাদাখে অবিলম্বে চীনা সেনা সরানো ও ফের যেন লাদাখের ঘটনা আর না হয় তার জন্য চীনের প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন চায়না টাউনের স্থানীয় বাসিন্দারা।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।