ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

কলকাতার বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
কলকাতার বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’ বক্তব্য রাখছেন কবি তারিক সুজাত। ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় এবারের থিম কান্ট্রি ‘বাংলাদেশ। ’ এ নিয়ে কোনো দেশ তৃতীয়বার এই শিরোপা পেল।

সে কারণেই ৩ ও ৪ মার্চ মেলা প্রাঙ্গণে পালিত হচ্ছে ‘বাংলাদেশ দিবস। ’

বাংলাদেশ দিবসের প্রথম দিনে মেলার এসবিআই অডিটোরিয়ামে ‘রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তিনটি বই’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়া চীন’―এই তিনটি বইয়ের বিশ্লেষণ করেন বিশিষ্টজনেরা।

প্রসঙ্গত, এই তিনটি বইয়ের আদলে এবারের মেলায় তিনটি প্রবেশদ্বার তৈরি করা হয়েছে, ফলে বইগুলো নিয়ে কলকাতার পাঠকদের কৌতূহল ছিল।

আর প্রথম দিনের সেমিনার শেষ হতেই পাওয়া যায় কৌতূহলের প্রমাণ। এদিন মেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি বই কিনতে পাঠকদের ভিড় দেখা যায়।

এর আগে সেমিনারে কবি কামাল চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্বের মিডিয়া বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজনীতির কবি’ অভিধায় ভূষিত হওয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলে, সাধারণ বাঙালির চেয়ে লম্বা, উচ্চতায় পাঁচ ফুট ১১ ইঞ্চি, কাঁচা-পাকা চুল, পুরু গোঁফ এবং সতর্ক কালো চোখের অধিকারী মুজিব তার সভা-সমাবেশে লাখ লাখ মানুষকে আকর্ষণ করতে পারতেন। জনৈক কূটনীতিক ভাষ্য, তিনটি ভাষা উর্দু, বাংলা এবং ইংরেজিতে অনর্গল মুজিব কখনোই একজন মৌলিক চিন্তাবিদের ভান করেন না। ’

‘‘রক্ত যখন দিয়েছি আরো দেব, আর দাবায়ে রাখতে পারবে না’- একজন কবি না হলে এই ভাষা চেতনা তৈরি হয় না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত কবিতা লেখা হয়েছে, আমি জানি না বিশ্বের আর কোনো নেতাকে নিয়ে এত লেখা হয়েছে কিনা। ’

বক্তব্য রাখছেন কবি কামাল চৌধুরী।  ছবি: বাংলানিউজ

এ প্রসঙ্গে কবি তারিক সুজাত বলেন, ‘কবি কামাল চৌধুরী সব বলে দিয়েছেন। নতুন করে আমার আর কিছু বলার নেই। যে বইগুলো নিয়ে  আলোচনা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু এই তিনটি বই লিখেছিলেন কারাগারে থাকার সময়। ওই কষ্টকর সময়ে তার শব্দ চয়ণ, ব্যাখ্যা, দূরদর্শিতা, দেশপ্রেম ও সততা লেখায় ফুটে উঠেছে। ’

‘কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুকে জর্জ ওয়াশিংটনের সঙ্গে তুলনা করেন। অন্যদিকে মৃত্যুতে তিনি আব্রাহাম লিংকন ও মহাত্মা গান্ধীর মত বিয়োগান্তক ব্যক্তিত্ব। যদিও এ তুলনা দুটি যথোপযুক্ত নয়। ওয়াশিংটন কিংবা লিংকনের সময় ও নেতৃত্বের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তবে এ তিনজনই পৃথিবীতে প্রবলভাবে সমাদৃত। এদের নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে। বিশেষ করে লিংকন ও গান্ধীর মৃত্যুর পর তাদের নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতাটি লিখেছেন অন্নদাশংকর রায়। ’

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তান কারাগারে বন্দি। অন্নদাশংকর রায় লিখেছেন―‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা, গৌরী মেঘনা বহমান, ততকাল রবে কীর্তি তোমার, শেখ মুজিবুর রহমান। ’ জীবদ্দশায় বাঙালি কবিরা বঙ্গবন্ধুর আরাধনা করেছেন। তারা বঙ্গবন্ধুর মাঝে রবীন্দ্রনাথের মহামানবকে খুঁজে পেয়েছেন। তাকে ঘিরে আজও লেখা হচ্ছে নবপ্রজন্মের জাতিস্মর কবিতা। বিশ্ববাসীর কাছে তিনি রাজনীতির কবি। বাঙালি কাছে চিরকালের আরাধ্য মহাকাব্য। ’

প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের মৈত্রী সম্মাননা পাওয়া পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট সাংবাদিক সুখ রঞ্জন দাসগুপ্ত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক চিন্ময় গুহ, কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০৩ ২০২১
ভিএস/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।