ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

মিলেছে ভারতে ৮৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মালয়েশিয়ায় ৭ ফ্লাট

ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পিকে হালদার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২২
ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পিকে হালদার প্রিজনভ্যান থেকে নামছেন পিকে হালদার -ছবি: ভাস্কর সরদার

কলকাতা: পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের আবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আদেশ দিয়েছেন কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। পাশাপাশি একইভাবে ফের ইডিকে জেল হেফাজতে জেরার অনুমতি দিয়েছেন বিচারক।

দুই সপ্তাহের জেল হেফাজত শেষে আগামী ২১ জুন তাদের আবার  আদালতে হাজির করা হবে।

মঙ্গলবার (৭ জুন) স্থানীয় সময় বেলা ১১টা পরপিকে হালদার ও তার সহযোগীদের আদালতে হাজর করা হয়। এ সময় ইডির আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী, আদালতকে বলেন, পিকে হালদারদের কাছ থেকে আর তথ্য পেতে জেরার জন্য তাদের আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখা হোক।

এরপর আসামি পক্ষের আইনজীবী বলেন, বিগত ২৫ দিন ইডি জেরা করছে। এখনও কী প্রমাণ করতে পেরেছে?। পিকে হালদরের সঙ্গে প্রাণেশ হালদারকে অহেতুক সমস্যায় ফেলা হচ্ছে। প্রাণেশ হালদারকে বেল দেওয়া হোক।

জবাবে ইডির আইনজীবী বলেন, পিকে হালদার আর প্রতীশ হালদার বাংলাদশি তার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। তাহলে প্রাণেশ কী করে ভারতীয় হয়। আসলে এরা প্রত্যেকেই জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত। এদের তিনজনের নামে ভারতে মোট ৮৭টি ব্যাংক একাউন্ট পাওয়া গেছে।

এসব অ্যাকাউন্টের কাজ ছিল ৫০- ৬০ জনের মধ্যে টাকা লেনদেন। সেই টাকা তাদের থেকে বের হয়ে অন্য খাতে চলে যেত। তার বদলে যাদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হত তাদের ২৫ হাজার রুপি বেতন দিতেন। এরমধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশি আছেন। যারা গোপনে ভারতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এর পাশাপাশি পিকের অ্যাকাউন্টে ৬০ কোটি রুপি পাওয়া গেছে। তবে নিজের এত টাকা আয়ের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক কোনো কিছু জানাতে পারেননি পিকে হালদার। এছাড়া মালয়েশিয়ায় পিকের ৭টি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। দুবাইতেও রিয়েল এস্টেটে লেনদেনের খবর তথ্য আছে। আরও তথ্য অস্পষ্ট আছে। তাই জেরার সুযোগ দিলে এসব বিষয়ে আরও তথ্য জানা যাবে।

এরপর আদালত তাদের ১৪ দিনের জেল হোফাজত ও জেলে জেরা করার আদেশ দেন।

এর আগে, ১৪ দিন ইডির রিমান্ডে থাকার পর, গত ২৭ মে আদালতের রায় অনুযায়ী, বিচার বিভাগীয় তদন্তের কারণে ১১ দিনের জেসি অর্থাৎ জুডিশিয়াল কাস্টাডি হয়েছিল পিকে হালদার ওতার সহযোগিদের। মঙ্গলবার (৭ জুন) আগের মতো একই নির্দেশ বহাল রাখলেন আদালত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ দিন পিকেদের টানা জেরায় এ পর্যন্ত অনেক তথ্য মিলেছে।   সূত্র আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের অবৈধ টাকায় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা ও কলকাতা সংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করছিলেন পিকে হালদার। সেই টাকা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছিলেন।

এছাড়া পিকে হালদার এবং শিবশংকর হালদার উভয় নামেই মোট ১৩টি কোম্পানির হদিস পাওয়া গেছে পশ্চিমবঙ্গে। পাশপাশি তার কাছ থেকে পাওয়া গেছে বাংলাদেশ, ভারত এবং দ্বীপ রাষ্ট্র গ্রেনেডার পাসপোর্ট। যদিও ভারতীয় পাসপোর্টে তার নাম রয়েছে শিবশঙ্কর হালদার।

সেই সঙ্গে কানাডাবাসী হিসেবে শিবঙ্কর নামে একাধিক নাগরিকত্বের নথি এবং মোবাইল, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার মিলিয়ে মোট ৮১টি ইলেকট্রনিকস ডিভাইস পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে সেগুলোর বেশ কয়েকটি ডিভাইস খোলা গেছে। তা থেকে ভারত এবং বাংলাদেশের বেশকিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে বলে ইডি সূত্র জানিয়েছে।
 
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে গ্রেফতার হন পিকে হালদার, প্রানেশ কুমার হালদার, প্রীতীশ কুমার হালদার, স্বপন মৈত্র, উত্তম মৈত্র ও আমনা সুলতানা। এরপর প্রথমে ৪ দিন ও পরে ১০ দিন অর্থাৎ, ১৪ দিন ইডির রিমান্ডে থাকার পর গত ২৭ মে আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিচার বিভাগীয় তদন্তের কারণে তাদের ১১ দিনের জেসি অর্থাৎ জুডিশিয়াল কাস্টাডি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২২
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।