ঢাকা: দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্য প্রযুক্তি খাতের (টেলিকমিউনিকেশন) বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান স্যামসাং বাংলাদেশে স্মার্ট ফোন তৈরিতে আগ্রহী। তাই এখাতে তারা চায় বিনিয়োগ করতে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত জানান, স্মার্টফোন খাতে বিনিয়োগ হলে বাংলাদেশে প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি কমপক্ষে ১০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের মোবাইল ফোন সেট ও এক্সেসরিজ রপ্তানি সম্ভব হবে। সেইসাথে বাংলাদেশে আরও কমদামে স্মার্টফোন পাওয়া যাবে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানটির স্মার্ট ফোনের মধ্যে রয়েছে সামসাং গ্যালাক্সি, স্যামসাং ওয়েভ, স্যামসাং স্টার ডুয়াস, স্যামসাং ওমনিয়া, স্যামসাং এম পাওয়ার টেক্সট, স্যামসাং কোরবি, স্যামসাং স্টার, স্যামসাং প্রাইমোসহ আরও কয়েকটি ব্র্যান্ড।
শিল্প মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত বুধবারের ওই বৈঠকে বাংলাদেশে কোরিয়ার দূতাবাসের বাণিজ্যিক শাখার মহাপরিচালক সাম সিক কিম সহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডে স্থাপিত জুতা কারখানার সম্প্রসারণ, তথ্য-প্রযুক্তিখাতে কোরিয়ার সহায়তা এবং শিল্পখাতে উন্নত প্রযুক্তি হস্তান্তরের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পখাতের প্রশংসা করে বলেন, গত শতাব্দীর ’৭০ এর দশকে কোরিয়ার দাইয়ু কোম্পানির সহায়তায় বাংলাদেশে যে তৈরি পোশাক কারখানা স্থাপিত হয়েছিল, আজ তা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের প্রধান খাত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়াতে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবেন বলে শিল্পমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য অর্জনে যুগান্তকারী অবদান রাখবে বলেও এসময় অভিমত দেন।
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এসময় বলেন, প্রায় ১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগকারিদের জন্য লোভনীয় বাজার। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বিরাট অংশ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। থ্রিজি প্রযুক্তি চালুর ফলে দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারির সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বিশ্বখ্যাত স্যামসাং কোম্পানি বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন শিল্পে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে। এদেশের সস্তা শ্রমশক্তি ও অভ্যন্তরীণ বাজারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যে কোনো বিদেশি উদ্যোক্তা লাভবান হতে পারে, বলেও মত দেন দিলীপ বড়ুয়া।
মন্ত্রী পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রযুক্তির শিল্পায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা কামনা করেন। শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ উন্নয়ন সহযোগী বিভিন্ন দেশের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় বাংলাদেশের শিল্পখাত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। জ্বালানি খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি সহায়তা আমাদের আরও এগিয়ে নিতে পারে।
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় জাহাজ নির্মাণশিল্প, চামড়া, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও জুতা তৈরিখাতে কোরিয়ার উদ্যোক্তারা যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। এতে আমরা দুই দেশই লাভবান হবো।
বাংলাদেশ সময় ১০০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১২
এমআইআর/এমএমকে; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর [email protected]