ঢাকা: এবার দুই স্ক্রিন বিশিষ্ট স্মার্টফোন বাজারে আনতে যাচ্ছে রাশিয়ার একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
ফোনটির দুটি স্ক্রিনের মধ্যে একটিতে ই-ইঙ্ক (ইলেকট্রনিক ইঙ্ক) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত চতুর্থ প্রজন্মের এই ফোনটি ২০১৩ সালের মাঝামাঝি বাজারে আনার পরিকল্পনা করছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইয়োটা। তারা মূলত মডেম ও রাউটার ধরনের বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করে থাকে। দুই স্ক্রিন বিশিষ্ট স্মার্টফোনটিই তাদের প্রথম মোবাইল ফোন হতে যাচ্ছে।
ব্যতিক্রমধর্মী এ ফোন নিয়ে ইয়োটা বলছে, এটি বাজারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফোন, যেমন- গ্যালাক্সি এস৩, এইচটিসি ওয়ান এক্স, সনি এক্সপেরিয়া টি’র সঙ্গে পাল্লা দেবে।
উল্লেখ্য, ই-ইঙ্ক বা ই-পেপার পর্দা সাধারণত ই-বুক রিডারে ব্যবহার হয়ে থাকে। সাদাকালো এই পর্দাটি বইপত্র পড়ার জন্য এলসিডির চেয়ে বেশি উপযোগী।
ইয়োটা জানিয়েছে, ফোনটির মূল এলসিডি স্ক্রিন ও সাদাকালো ই-ইঙ্কের স্ক্রিন ফোনের দুই বিপরীত পাশে থাকবে। দুটি স্ক্রিনের আকারই ৪ দশমিক ৩ ইঞ্চি। এদের সুরক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নিং কোম্পানির তৈরি ঘাতসহ গরিলা গ্লাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইয়োটার প্রধান নির্বাহী ভ্লাদ মার্টিনভের মতে, এখন পর্যন্ত অন্য কোনো কোম্পানি এমন কোনো ডিভাইস তৈরি করেনি।
তিনি বলেন, “দুই বছর আগেও আমরা এতোরকম তথ্যের উপর নির্ভরশীল ছিলাম না। কিন্তু এখন ফেসবুক, টুইটার থেকে শুরু করে প্রচুর ফিড প্রয়োজন হয় আমাদের। ”
অনবরত চলতে থাকা এসব তথ্যপ্রবাহের কিছুই যাতে চোখ না এড়ায়, সেজন্যই স্মার্টফোনে ইলেকট্রনিক পেপার ডিসপ্লে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে ইয়োটা।
দুই স্ক্রিনে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করার সুবিধার ফলে ব্যবহারকারীরা একদিকে যেমন ফোনের সাধারণ সব কাজ করতে পারবেন, তেমনি যে কোনো মুহূর্তে উল্টোদিকের পর্দা থেকে প্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বা তথ্যটি জেনে নিতে পারবেন।
ইয়োটা প্রায় দুই বছর ধরে এ ডিভাইস নিয়ে কাজ করছে। তবে দ্বিতীয় স্ক্রিনকে আরও ব্যবহার উপযোগী করার জন্য বাজারে আসার আগে এতে আরও কিছু অ্যাপ্লিকেশন যুক্ত করা হবে বলে তারা জানিয়েছে।
ফোনটি জনপ্রিয় হলে ডেভেলপাররা নতুনধর্মী এই ডিভাইসের জন্য সম্পূর্ণ নতুন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পারবেন। তবে এটি জনপ্রিয় হবে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিম ইউরোপে এ ধরনের ফোনের তেমন প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন কেউ কেউ। কোনো নামি-দামি ব্র্যান্ড ছাড়া কিংবা স্বল্পমূল্য ছাড়া পশ্চিমের বাজারের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা সম্ভব নয় বলে তারা মনে করছেন।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠেয় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফোনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারে ইয়োটা। প্রথমে এশিয়া, তারপর রাশিয়া ও পর্যায়ক্রমে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বাজারে প্রবেশ করার পরিকল্পনা আছে তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১২
সম্পাদনা: হাসান শাহরিয়ার হৃদয়, নিউজরুম এডিটর