ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মঙ্গলবার ২৫ ডিসেম্বর হালনাগাদ তথ্যপ্রযুক্তিপণ্যের প্রদর্শনী ‘বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০১২’ শুরু হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) ‘দিন বদলের দীক্ষা, প্রযুক্তি আর শিক্ষা’ বার্তায় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তথ্যপ্রযুক্তির দেশের বৃহত্তম এ প্রদর্শনীতে ১৫টি প্যাভিলিয়ন ও ৯০টি স্টলে ৫২টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল জীবনধারাভিত্তিক পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। তথ্যপ্রযুক্তির নতুন সব আবিষ্কারের খোঁজ যেমন মিলছে এখানে তেমনি রয়েছে বৈচিত্র্যময় বহু আয়োজন।
সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া বাজারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস সভাপতি ফয়েজুল্যাহ খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএসের পরিচালক মোস্তাফা জব্বার। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রদর্শনীর প্ল্যাটিনাম স্পন্সর ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএস তাবরেজ।
এ ছাড়াও প্রদর্শনীর আহ্বায়ক ও বিসিএস মহাসচিব শাহিদ-উল-মুনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিসিএসের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, সাধারণ সদস্য, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাও উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকার শান্তিময়, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নে অনেকখানিই এগিয়েছে সরকার। ই-সেবা, ই টেন্ডারিংসহ সাফল্যের বেশ কিছু উদাহরণও তুলে ধরেন তিনি। বাকি পথ চলতে তিনি সাধারণ মানুষের সচেতনতা, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের প্রচেষ্টা, শ্রমিকের নিবেদন, উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত সহযোগিতা কামনা করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমনে তথ্যপ্রযুক্তিই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এ জন্যই ভূমি ব্যবস্থাসহ সরকারের সেবাসমূহ ডিজিটাইলাইজেশনে সরকার তৎপর আছে। আর তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশকে আরও ত্বরান্বিত করতে জানুয়ারির মধ্যেই মোবাইলে থ্রিজি সেবা সব মোবাইল অপারেটরদের জন্য উন্মুক্তকরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি সব সময়ই সরকারের প্রথম বিবেচ্য বিষয় ছিল। আছে। তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে এবং এ খাতের বাণিজ্যের প্রসারে প্রতিবন্ধকতাগুলো অচিরেই দূর করার আশ্বাসও দেন অর্থমন্ত্রী।
বিসিএস পরিচালক মোস্তাফা জব্বার ২৫ বছরে বিসিএসের সাফল্য ও অর্জন এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে অবদান তুলে ধরেন। এ সময় তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসা-বাণিজ্যের বাধাগুলোও তুলে ধরেন। এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, সরকারের বাকি এক বছরের মধ্যে ভূমি ব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করা না হলে সাধারণ মানুষের ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএস তাবরেজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মোবাইল ব্যাংকিং এবং সামাজিক কল্যাণে শিক্ষাখাতে ১০২ কোটি টাকার বৃত্তিপ্রদানসহ নিজেদের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কথা জানান। এ সময় তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিসিএসের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বিসিএস সভাপতি ফয়েজুল্যাহ খান সংগঠনের সাফল্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরে এ খাতের ব্যবসায়ীদের স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান, শুল্ক ছাড় ছাড়াও বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে সরকারের সার্বিক সহায়তা প্রত্যাশা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এতে প্রথম আয়োজন ছিল ডিজিটাল চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতার। আর সেলিব্রেটি শোতে দর্শকদের গান শুনিয়েছেন কন্ঠশিল্পী প্রীতম। এ ছাড়াও ছিল র্যাফল ড্র। প্রদর্শনীতে প্রতিদিনই র্যাফল ড্রয়ে আছে ল্যাপটপ ছাড়াও ১০টি আকর্ষণীয় পুরস্কার। কিউবির সৌজন্য এ প্রদর্শনীতে চতুর্থ প্রজন্মের ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, প্রদর্শনীতে ২৬ ডিসেম্বর বুধবার বিকাল ৩টায় আছে ‘ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং ও ওপেন সোর্স: অবারিত ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনার। এ ছাড়াও দিনব্যাপী ডিজিটাল চিত্রাঙ্কন, কুইজ এবং সেলিব্রেটি শো দেখানো হবে।
বাংলাদেশ সময় ১৬২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১২
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান