ডিজিটাল বৈষম্য। উন্নত আর উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে এটি এখন মূখ্য উপাত্ত।
প্রতি বছরই আইসিটি এবং ইন্টারনেট এ দুটি শক্তিশালী টুলস ব্যবহার করে দেশের স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন মানোন্নয়নে কোনো দেশ এগিয়েছে এ তালিকা প্রকাশ করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম।
সদ্য প্রকাশিত তালিকায় বাংলাদেশ এক ধাপ পিছিয়ে এবারে ১১৪ তম অবস্থানে আছে। এ তালিকায় বাংলাদেশের স্কোর ৩.২২। আর শীর্ষে থাকা ফিনল্যান্ড স্কোর করেছে ৫.৯৮। বিশ্বের ১৪৪টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ এ অবস্থানে এসেছে।
এ তালিকায় বাংলাদেশের ঠিক উপরেই আছে নাইজেরিয়া এবং তাজিকিস্তান। আর বাংলাদেশের ঠিক নিচেই আছে জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে।
দেশের বিদ্যমান ডিজিটাল বৈষম্য প্রসঙ্গে দেশের সফটওয়্যার খাতের শীর্ষ সংগঠন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শামীম আহসান বাংলানিউজকে বলেন, দেশের ৯ কোটি মোবাইল গ্রাহককে সহজলভ্য মোবাইলভিত্তিক ডেটা অ্যাপের সুবিধা দিতে হবে। ভাস (ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস) সেবায় মোবাইল অপারেটরেরা ৭০ ভাগ অবধি চার্জ করে। ফলে এটি সাধারণ এবং প্রান্তীক গ্রাহকের জন্য ব্যয়বহুল হয়।
এ ছাড়া ইন্টারনেটকে নামমাত্র মূল্যে এবং একেবারে সাশ্রয়ী দামে ভোক্তাদের মধ্যে সরবরাহ করতে হবে। ফলে ইন্টারনেটে সাবির্ক ব্যবহার (পেনিট্রেশন) আরও বাড়বে। আর তা দেশের বিদ্যমান ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এমনকি দেশের রাজস্ব এবং সার্বিক ব্যবসা উন্নয়নে ইন্টারনেটের মতো শক্তিশালী মাধ্যমকে এখন আর কোনোভাবেই পাশ কাটিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী আন্দোলনও শুরু হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’ নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ শুরু হয়েছে।
ই-গভর্ন্যান্স এবং ই-কমার্সকে গতিশীল এবং সুবিস্তৃত করতে না পারলে ধনী-গরিবের মধ্যেকার ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা অসম্ভব। এমনটাই জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গবেষকেরা।
এদিকে ‘নেটওয়ার্ক রেডিনেস ইনডেক্স’ বলছে আইসিটি এবং ইন্টারনেটে সবচেয়ে সফল ব্যবহারে ফিনল্যান্ড এবারে শীর্ষ অবস্থান নিয়েছে। এ তালিকায় সিঙ্গাপুর দ্বিতীয়, সুইডেন তৃতীয়, নেদারল্যান্ড পঞ্চম এবং নরওয়ে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর এ তালিকার শীর্ষে ছিল সুইডেন। সিঙ্গাপুর যথারীতি দ্বিতীয় অবস্থানে। তবে তৃতীয় অবস্থান থেকে শীর্ষে উঠে এসেছে ফিনল্যান্ড।
বিশ্বের প্রযুক্তিবান্ধব দেশ হিসেবে খ্যাত যুক্তরাষ্ট্র আছে এ তালিকার নবম অবস্থানে। রাজনৈতিক এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানামুখী কার্যক্রমে এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে এসেছে বলে গবেষকেরা মন্তব্য করেছেন।
এদিকে ৫.৪৭ স্কোর নিয়ে দশম অবস্থান ভাগাভাগি করে নিয়েছে তাইওয়ান ও চীন। আর ভারত ৩.৮৮ স্কোর নিয়ে আছে ৬৮তম অবস্থানে।
বাংলাদেশ সময় ১৯১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৩