দেশের রাজস্ব এবং জীবনমান উন্নয়নে ‘আইসিটি ফর গ্রোথ’ এখন সফল মাধ্যম। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি এখন তারুণ্য।
আগামী ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে এ শক্তির মানোন্নয়ন অন্যতম প্রধান শর্ত। কথাগুলো বললেন তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী (আইসিটি) মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ।
এ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করে নাগরিক সেবা বাড়াতে ই-গভর্ন্যান্স পরীক্ষিত ও সক্রিয় মাধ্যম। এ দেশের জনশক্তিকে দক্ষ শক্তিতে পরিণত করতে হবে।
এ ছাড়াও চীনের বাজারে আগামী ১০ বছরে ১ কোটি আইসিটিনির্ভর চাকরির বাজার তৈরি হবে। এ বাজারে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে বাংলাদেশই এগিয়ে। তাই এখন থেকেই এ বাজারে প্রবেশের জন্য দক্ষ জনবল তৈরির উদ্দেশ্যই এ প্রকল্প পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা ফারুক মোহাম্মদ বলেন, এ সরকারের লক্ষ্য ডিজিটাল ছোঁয়ায় জীবনের পরিবর্তন অনায়ন। এ লক্ষ্যে পূরণে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগে কাজ করে যাচ্ছে। সমৃদ্ধ স্বদেশ সৃষ্টির স্বপ্নে তিন বছর আগে যে চারাগাছ রোপন করা হয় আজ তা বিশাল বৃক্ষ। এ বৃক্ষের নাম ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। আজকের বাংলাদেশ অগ্রগতি ও প্রগতির উজ্জ্বল আলোক শিখা। এ আলোক শিখাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিকনিদের্শনা দেবে।
ঢাকার আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ভবনে ‘আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করা হয়। এ প্রকল্পের জন্য ৫ কোটি ৭২ লাখ টাকার প্রস্তাবিত অর্থায়নই করবে বিশ্ব ব্যাংক। এ মুহূর্তে সরকারের বিভিন্ন দফতরে ১৫ হাজার আইসিটি পেশাজীবী কাজ করছে। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ৪২ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
এ প্রসঙ্গে আইসিটি সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার ডিজিটাল উদ্দেশ্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আর্থিক বিনিয়োগও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের তরুণ জনশক্তিতে দক্ষ আইসিটি শক্তিকে রূপান্ত করতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সালমান জহির, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক এসএম আশফাক হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ সিস্টেম অ্যানালিস্ট তারেক মোহাম্মদ বরকত উল্যাহ।
জীবন মানোন্নয়নের এ প্রকল্পের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পরিচালক রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের পরিচালনা এবং বাস্তাবায়ন করবে বিসিসি। অর্থায়ন করবে বিশ্ব ব্যাংক। আইসিটির পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে এ প্রকল্পের অধীনে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান বিকাশের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি ও রপ্তানি আয়ের নতুন ক্ষেত্র তৈরি করা হবে। পাবলিক সেক্টর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আধুনিকায়নের জন্য উপযুক্ত মান ও নির্দেশাবলী তৈরি করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের জন্য ৩০ হাজার সুদক্ষ জনবল তৈরি এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। বাংলাদেশের আইসিটি শিল্পকে বিশ্বের কাছে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপনের মাধ্যমে এ খাতকে আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রহণযোগ্য করে তোলা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যে উপযুক্ত আইন ও নীতিমালা তৈরিও এ প্রকল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক।
আইসিটি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, দেশে আইসিটি পেশাজীবী তৈরি করাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। অচিরেই মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময় ১৬৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৩