ব্যবসা এখন গাণিতিক গতিতে প্রবৃদ্ধি অজর্ন করছে। নতুন কোনো ফর্মুলা নয়, একা ইন্টারনেট-ই পুরো বিশ্বের গণযোগাযোগ এবং পণ্য বিপণন প্রক্রিয়াকে রাতারাতি বদলে দিয়েছে।
এ মাধ্যমের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম এখন স্মার্টফোন। উচ্চ গতির ইন্টারনেট নিশ্চিত হলেই এ মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবে। অর্থনৈতক গবেষকেরাও এমন তথ্যই দিয়ে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গের সত্যতার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন কোয়ালকম ভারত এবং দক্ষিণ এশিয়ার সভাপতি অভনিশ আগারওয়াল। এখন ৫৫ মেগাপিক্সেলের স্মার্টফোন ক্যামেরাও পাওয়া যাচ্ছে।
ইন্টারনেট দুনিয়ার হাত ধরে স্মার্টফোন এখন বিপ্লবের সূচনা করেছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এ বিষয়ে সুস্পষ্ট গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে। এ মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতারা খুদে অবয়বের চিপ এবং প্রসেসর তৈরিতে ব্যাপক বিনিয়োগ এবং জনবল নিয়োগ করেছে।
এতে এটাই প্রমাণ নিকট ভবিষ্যতে স্মার্টফোনের জগতে আরও বহুমাত্রিক পরিবর্তন সূচিত হবে। জীবনের অবিচ্ছেদ্য পণ্যমাধ্যম হবে ইন্টারনেট আর স্মার্টফোন। এতে পুরো বিশ্বের ব্যবসায়িক আবহও বদলে গেছে। মানুষ এখন ঘরে বসেই সব ধরনের আর্থিক, পেশাগত এবং সামাজিক দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সময়মতো পালন করতে পারছেন।
এ খাতে ভারতের উন্নয়নের তথ্যচিত্র তুলে ধরতে আগারওয়াল বলেন, ভারতে এখন বছরে ২ থেকে ৩ কোটি স্মার্টফোন বিক্রি হচ্ছে। আগামী ২০১৫ সালের মধ্যেই ভারতে স্মার্টফোন বিক্রির সংখ্যা ১০ কোটির অঙ্ক পূরণ করবে। এ মুহূর্তে প্রতিবছর বিশ্বে ৯০ কোটি স্মার্টফোন বিক্রি হচ্ছে।
বিশ্বে কোনো পণ্যই এত বিপুল পরিমাণ বিক্রির রেকর্ড গড়েনি। আর স্মার্টফোন উন্মাদনায় টেবিলে থাকা ডেস্কটপ পিসির দিন ফুরিয়ে এসেছে। এ জন্য ব্যবসায়ীক দৃষ্টিতে স্মার্টফোনকেই দুষছেন বাজার বিশ্লেষকেরা।
ইন্টারনেট মানেই পুরো বিশ্বের প্রবেশপথ। ইন্টারনেট আর স্মার্টফোন দুয়ে মিলে নিপুণ কৌশলে বিশ্বের ভেতর আরেক বিশ্ব গড়ে তুলছে। এদিকে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই স্মার্টফোনের তুলনায় পিসি বিক্রির হার একেবারেই কমে যাচ্ছে।
বিশ্বের সব ধরনের গণমাধ্যমে নন-স্টপ মাল্টিমিডিয়া ক্যামেরা, ভিডিও, তথ্যসেবা, জনসেবা এবং জীবনধর্মী পণ্যসেবার বদৌলতে প্রতিযোগিতার মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। সব কিছুতেই একে একে করায়ত্ত্ব করছে অনলাইন গণমাধ্যম।
তথ্যই শক্তি। বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এ শক্তিকে পাশ কাটিয়ে খুব বেশিদিন টিকে থাকা সম্ভব নয়। পুরো বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রযুক্তিগত প্রয়োগ, প্রচার এবং মানোন্নয়নের দিকে এ চিত্রটা সহজেই অনুমেয়।
অনলাইন গণমাধ্যম যে শুধু ঘটে যাওয়ার ঘটনার কথা বলবে তা কিন্তু, পণ্য কেনাবেচনা, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, ভিডিও কনফারেন্স, মুহূর্তের ঘটনা তাৎক্ষণিক সম্প্রচার সব মিলিয়ে নবযুগের বিশ্ব গড়ার কথাই সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করছে।
বিশ্বের সবগুলো শীর্ষ ব্র্যান্ড এখন বিজ্ঞাপনী বাজেটের ৩০ ভাগেরও বেশি বরাদ্দ রাখছে অনলাইন বিজ্ঞাপনের জন্য। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশের সরকারও (ই-গভর্ন্যান্স) স্বচ্ছতা আর নাগরিক সেবা নিশ্চিতে অনলাইনকেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
তবে শুধু গুরুত্ব নয়, বরং ইন্টারনেটকে যদি সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী, সহজলভ্য আর গতিশীল করা না যায় তাহলে এ মাধ্যমের প্রকৃত সুফল পাওয়া অসম্ভব। এমন ভাবনার কথাই জানিয়েছিলেন ভবিষ্যৎ স্বপ্নদ্রষ্টা অ্যাপলগুরু স্টিভ।
নিত্যনতুন জীবনধর্মী সহজ সেবায় অনলাইন এখন আরেক বিশ্ব গড়ে চলেছে। জীবনের সব ধরনের পরিবর্তনের সঙ্গেই অনলাইন জুড়ে গেছে। বিশ্ব পরিসরের সব কিছুই এখন ইন্টারনেট দুনিয়ার তালিকাভুক্ত হচ্ছে। ২০১৫ সালে বিশ্বকে তাই আজকের তুলনায় অনেকটাই অপরিচিত মনে হবে। সময়ের এ পরিবর্তনকে বিশ্লেষকেরা ‘স্মার্ট বিপ্লব’ বলেই অবিহিত করছেন।
বাংলাদেশ সময় ২১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৩