ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

রাস্তার গতিরোধক থেকে বিদ্যুৎ!

ইসমাইল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৩
রাস্তার গতিরোধক থেকে বিদ্যুৎ!

ঢাকা: ব্যস্ত সড়কে হঠাৎ গতিরোধক। চলন্ত গাড়ির গতি নেমে এলো সর্বনিম্নে।

এ নিম্ন গতি থেকে তৈরি হবে বিদ্যুৎ। জ্বলবে বাতি, ঘুরবে চাকা, মিটবে বিদ্যুতের চাহিদা।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) চার শিক্ষার্থী স্বপ্ল খরচে বিদ্যু উৎপাদনের ওই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

এ চার শিক্ষার্থী হলেন রোকনুজ্জামান রাগিব, শামিমুল ইসলাম, এসএম রাইয়ানুর রহমান ও আরিফুজ্জামান।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের কোর্স ফাইনাল প্রজেক্টের আওতায় উদ্ভাবিত এ পদ্ধতিতে স্বপ্ল খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশলকে তারা দেশে প্রথম বলে দাবি করছেন।
 
এ প্রজেক্টের সুপারভাইজর হিসেবে ছিলেন ইউআইটিএস-এর শিক্ষক শেখ মো. কাজী নজরুল ইসলাম। এছাড়াও ছিলেন মো. মাহমুদল হাসান, রাজিব বরণ রায়, রুহুল আমিন রাসেল ও আবেদুল হাদি।
Bidut

ইউআইটিএস চার শিক্ষার্থীর তিনজন
 
শিক্ষার্থীরা জানান, সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অসংখ্য গতিরোধক রয়েছে। এসব গতিরোধকই হতে পারে নবায়নযোগ্য শক্তির অন্যতম উৎস। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি গাড়ির ওজনের কারণে গতিরোধকের ওপর সৃষ্ট চাপকে মেকানিক্যাল বিন্যাসের মাধ্যমে ইলেকট্রিক্যাল শক্তিতে রূপান্তর করা সম্ভব।
 
গ্রুপ লিডার রোকনুজ্জামান রাগিব বলেন, প্রতিটি গতিরোধকে গাড়ির যে শক্তি অপচয় হয় সেই গতি শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করার চেষ্টা করা হয়েছে। যদি ১০০ কেজি ভরের একটি গাড়ি গতিরোধকের ওপর দিয়ে ১০ সেকেন্ড সময়ে অতিক্রম করে তাহলে প্রতি মিনিটে ৭০ দশমিক ৬৩২ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যাবে। এ হিসেব অনুযায়ী প্রতি ঘণ্টায় ৪ দশমিক ২৪ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।
 
শিক্ষার্থীরা বলেন, এ পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ঝাঁঝ কাটা ৠাক, প্যানিয়ন, স্প্রিং, ডায়নামে ও ব্যাটারির প্রয়োজন পড়বে। কোনো গাড়ি গতিরোধকের ওপর উঠলে তা যে পরিমাণ চাপ দেবে সে গতিতে চাপ পড়বে ৠাকের ওপর। ৠাক নিচে নামা ও উঠা করার সময় সঙ্গে লাগানো প্যানিয়নও ঘুরতে থাকবে। প্যানিয়নের অপর প্রান্তে লাগানো ডায়নামোর সাহায্যে বিদ্যুৎ শক্তিকে ও ব্যাটারিতে ধারণ করা যাবে। আর সঞ্চিত এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে নানা কাজে।
 
শিক্ষার্থীদের দাবি, বাণিজ্যিকভাবে উৎপন্ন করা গেলে জাতীয় গ্রিডে এ বিদ্যুৎ যোগ করাসহ নির্দিষ্ট কোনো এলাকা বা অঞ্চল নিরবিছছিন্নভাবে আলোকিত করা সম্ভব। তারা ব্যবহারিকভাবে জিরো ওয়াটের লেড বাতিও জ্বালিয়েছেন।
 
প্রজেক্টে সুপারভাইজার শেখ মো. কাজী নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন দেশে গতিরোধক থেকে বিদ্যুৎ  উৎপাদন হলেও স্বপ্ল খরচে এ পদ্ধতি একেবারে নতুন। উৎপাদিত এ বিদ্যুৎ শক্তি বিদ্যুহীন এলাকায় রাতে রাস্তার বাতি জ্বালানো যাবে। এছাড়া বড় আকারে করা হলে তা দিয়ে আরো উচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুৎ উপাদন সম্ভব।
 
প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে একটি পদ্ধতিতে উচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে আশাব্যক্ত করেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৩
এমআইএইচ/এসএফআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।