ঢাকা: কাঁধে করে স্কুলে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার দিন শেষ হচ্ছে। এবার স্মার্ট ডিভাইসে থাকবে পাঠ্যসূচি, ডিভাইস নিয়েই ক্লাসে যাবে শিক্ষার্থীরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বইয়ের মাল্টি মিডিয়া ভার্সন স্মার্ট ডিভাইসে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সিম্ফনি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই বিশেষ ডিভাইসটির কল্যাণে খুব শিগগিরই দেখা যাবে এ দেশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা কাঁধে বিশাল বইয়ের ব্যাগের পরিবর্তে ক্লাসরুমে প্রবেশ করছে বিশেষ ধরনের শিক্ষামূলক স্মার্ট ডিভাইস নিয়ে।
বৃহস্পতিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এ প্রকল্প সম্পর্কিত এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব এন আই খান, সিম্ফনি মোবাইল এর সেলস ডিরেকটর রেজওয়ানুল হকসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
কর্মকর্তারা জানান, এই শিক্ষামূলক ডিভাইসের কল্যাণে প্রচলিত কাগজের বইয়ের অনেক সীমাবদ্ধতা দুর হয়ে যাবে। বইয়ে ব্যবহƒত ছবিগুলো অ্যানিমেটেড হওয়ায় এবং শব্দ সুবিধা সংবলিত থাকার কারণে এই ডিভাইসটি শিক্ষা গ্রহণে ছাত্র ছাত্রীদের আগ্রহ এবং আনন্দ বাড়িয়ে দেবে বহুমাত্রায়।
এই ডিভাইস এর কল্যাণে শিক্ষা জীবনের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠবে। ফলে উন্নতবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে খুব সহজেই অবদান রাখতে পারবে আমাদের নতুন প্রজন্ম।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানায়, শিক্ষকদের জন্যও বিশেষভাবে সহায়ক হবে এই ডিভাইসটি। ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির কল্যাণে শিক্ষক তার ডিভাইসটি সংযুক্ত করতে পারবেন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের ডিভাইসের সাথে এবং সকল শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ বা ক্লাসের অনুশীলন চেক করতে পারবেন নিজের ডিভাইস থেকে।
এর ফলে একজন শিক্ষক অল্পসময়ে অধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে পারবেন এবং অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে পারবেন। তাছাড়া প্রতিবছর পাঠ্যবই মুদ্রণে যে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয় তাও সাশ্রয় হবে।
সিম্ফনি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পটিতে কনটেন্ট পার্টনার হিসেবে থাকছে স্মার্ট স্টার্ট।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এরইমধ্যে পাঠ্যসূচির ডিজিটাল ভার্সন তৈরি করেছে।
বোর্ডের চেয়ারম্যান শাফিকুর রহমান বাংলানিউকে বলেন, কাগজের প্রচলিত পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও ভবিষতে আরো সহজতর করতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
এরইমধ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রথম শ্রেণির সকল বই মাল্টিমিডিয়া ভার্সনে রুপান্তর সম্পন্ন হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকগুলোও এই ডিভাইসে ব্যবহারের উপযোগী করে রুপান্তর করা হবে।
মন্ত্রণালয় এবং সিম্ফনির সঙ্গে এ বিষয়ে শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব এন আই খান বাংলাউনিজকে বলেন, প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করা হবে। সফলতা এলে ব্যাপক আকারে চালু করা হবে।
এজন্য ব্র্যাকের সহযোগিতায় পাঠ্যপুস্তকের মাল্টিমিডিয়া ডিভাইস তৈরি করা হবে যাতে সিনেমা হলের পর্দার মতো প্রজেক্টরে দেখা যায়। এর ফলে আধুনিক শিক্ষার ধারাবাহিকতা আরও এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪