ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ডাব্লিউএসআইএস অ্যাওয়ার্ডে এবারও বাংলাদেশ

আইসিটি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
ডাব্লিউএসআইএস অ্যাওয়ার্ডে এবারও বাংলাদেশ

তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মৌলিক ও জনকল্যাণকর প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং এ সম্পর্কিত সেবা প্রদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডাব্লিউএসআইএস) প্রতিবছর পুরস্কার প্রদান করে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) বাস্তবায়িত প্রকল্প ‘ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র’ গতবছর আন্তর্জাতিক এই পুরস্কার পায়।

তারই ধারাবাহিকতায় এবারও প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকায় চারটি ক্যাটাগরিতে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের সাতটি উদ্যোগ। উদ্যোগগুলো হলো অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশনের ‘শিক্ষক বাতায়ন’, অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন ও বেসিসের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ এবং বেসিসের সদস্য কোম্পানি সিনেসিস আইটির মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক প্রকল্প ‘এমহেলথ’, প্রাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের কৃষি তথ্যসেবা বিষয়ক প্রকল্প ‘হেলো ১৬১২৩’, এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ‘আমাদের ডাক্তার’ ও ‘ফার্মার কোয়ারি সিস্টেম’, উইন মিয়াকি লিমিটেডের ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস ২৭৬৭৬’। আর এই সাতটি প্রকল্পকে ভোট দিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সবার কাছে ভোট চেয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

রোববার আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) অডিটোরিয়ামে ‘মিট দ্য প্রেস’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ও মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার।

বেসিসের নির্বাহী পরিচালক সামি আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিনেসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী, এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ই-এগ্রিকালচার বিশেষজ্ঞ মো. নজরুল ইসলাম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডাব্লিউএসআইএস এর প্রকল্প পুরস্কার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্যোগ ও বাস্তবায়নের বড় ধরনের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়ন এবং ৫ বছরের মধ্যে মানুষের জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তনের স্বীকৃতিস্বরূপ গতবছর এটুআইকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

পলক বলেন, এবার আমাদের সামনে রয়েছে সাতটি প্রকল্প। ২৫ হাজার ওয়েবসাইট সমৃদ্ধ জাতীয় তথ্য বাতায়ন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ওয়েব পোর্টাল। এর মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সকল সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ও দেশের শিক্ষাখাতকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিতে তৈরি করা হয়েছে “শিক্ষক বাতায়ন”। বেসরকারিভাবে তৈরি এমহেলথ প্রকল্পটি এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি মানুষকে ঘরে বসেই চিকিৎসা সেবা ও তথ্য পাওয়ার সুবিধা দিয়েছে। অন্যান্য চারটি প্রকল্পও আন্তর্জাতিকভাবে বিজয়ী হওয়ার যোগ্য। আর এজন্য প্রয়োজন সর্বাধিক সংখ্যক ভোট।

শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, জীবন ধারণের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও সরকারি-বেসরকারি ই-সেবা পাচ্ছে। তেমনই সাতটি সেবা এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে। আমাদের সবার উচিত প্রকল্পগুলোকে ভোট দেয়া।

এবারের মনোনীত প্রকল্পগুলো গতবারের মতো আন্তর্জাতিক এই স্বীকৃতি অর্জন করতে পারলে দেশের তথ্যপ্রযুক্তির ইতিহাসে আরেকটি বিশাল মাইলফলক হয়ে থাকবে। গতবারের পুরস্কার জেতার পর কয়েকটি দেশ তাদের দেশেও ‘ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র’ বাস্তবায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যেই মালদ্বীপ এ বিষয়ে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর করেছে বলেন জানান শামীম আহসান।

ব্যবসায়িক লাভের পাশাপাশি পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন সেইসাথে ২০১৮ সালের মধ্যে বেসিসের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ ভিশনের অন্যতম লক্ষ্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রফতানি আয় ১ বিলিয়ন ডলার অর্জনে সহায়ক হবে বলে আশাবাদ করেন তিনি।

এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, সরকারিভাবে দেশের ই-গভর্নেন্সসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এটুআই। এবারও চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করবে বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভোট প্রদান করা যাবে আগামী ১ মে পর্যন্ত। ভোট দিতে http://goo.gl/n2Ogcc ঠিকানায় গিয়ে ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড লিখে নাম নিবন্ধন করলে চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য ফিরতি বার্তায় একটি লিংক আসবে। লিংকে ক্লিক করে নিবন্ধন সম্পন্ন করলে লগইন পেজে ইউজার নাম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ভোট দেয়া যাবে।

এক্ষেত্রে ভোটিং পেজে এস অর্গানাইজেশন নেম অংশে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন, টাইপ অংশে গভর্নমেন্ট এবং কান্ট্রি অংশে বাংলাদেশ লিখে সাবমিট করতে হবে। এরপর ভোট অপশনে ক্লিক করে ১ থেকে ১৮ পর্যন্ত সিরিয়ালের পেজের ৩, ৪, ১০ ও ১৩ নম্বর ক্যাটাগরিতে থাকা বাংলাদেশি প্রকল্পগুলোকে ভোট দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই চারটি ক্যাটাগরি ছাড়াও বাকি ক্যাটাগরিতেও ভোট দিতে হবে।

আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের আয়োজনে আগামী ২৫ থেকে ২৯ মে জেনেভায় অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে পুরস্কার হস্তান্তর করা হবে। একটি দেশ একবার শুধুমাত্র দুইটি ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
এসজেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।