বগুড়া: সুন্দর করে সাজানো আকর্ষণীয় মঞ্চ। পেছনে একটি খড়ের ছাউনির ঘর।
সুদিনের শুরু এখানেই-২৭৬৭৬ জিপি কৃষিসেবা নিয়ে কৌতুকের মাধ্যমে নানা-নাতি নানান তথ্য তুলে ধরেন। মাঝে মধ্যে গান গেয়ে ওঠেন। নানা-নাতির কৌতুকভরা কথা আর গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে যাচ্ছিলেন বাদকরা।
এভাবে প্রায় বিশ মিনিট নানা-নাতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভাষায় মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন। এরপর মঞ্চে আসেন গ্রামীণফোনের ডেপুটি ডিরেক্টর ও হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন সাইয়েদ তালাত কামাল। দর্শক গ্যালারিতে বসা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন গ্রামীণফোনের কৃষিসেবা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শুরু করে শহরের ছিলিমপুরে অবস্থিত নাজ গার্ডেনে এ আয়োজন চলে দুপুর পর্যন্ত।
গ্রামীণফোনের ডেপুটি ডিরেক্টর ও হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন সাইয়েদ তালাত কামাল জানান, গ্রামীণফোন সব সময় অভিনব সেবাদানের মাধ্যমে এ দেশের মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলতে চেষ্টা করে। সব ধরনের মানুষের জন্য সেবাকে ক্রমাগত বিভিন্ন আঙ্গিকে বিস্তৃত করছে গ্রামীণফোন।
জিপি কৃষিসেবা অভিনব সেবাগুলোরই একটি। দেশের কৃষকদের তথ্যগত সহায়তা প্রদান করাই এ সেবার লক্ষ্য। এটা কৃষকদের জীবনে নতুন সুবিধা দানের মাধ্যমে তাদের জীবনকে সহজ করে তুলবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
তিনি আরো জানান, কৃষিসেবার পরীক্ষামূলক পর্যায়েই প্রায় ১২ হাজার কৃষক সেবা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। পরীক্ষামূলক পর্যায় থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন সংস্করণে প্রয়োজনীয় আরও তথ্য যোগ করে এই সেবার সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান ‘জিএসএমএ’ উন্নয়নশীল দেশগুলোর থেকে দরপত্রের প্রস্তাবনা আহ্বান করে এবং বাংলাদেশে এটা জিতে নেয় গ্রামীণফোন।
এছড়াও তারা কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট এবং বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থা নিয়েও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে। জিপি কৃষিসেবায় কন্টেন্ট পার্টনার হিসেবে আছে উইনমিয়াকি লিমিটেড।
কৃষি বিষয়ক অন্যান্য সংস্থা ও অংশীদারেরা এ প্রকল্পে কাজ করছে। কৃষি ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধিতে কৃষি বিশেষজ্ঞ, কৃষি সম্প্রসারণ সংগঠন ও কৃষিপণ্য বিক্রেতাদের একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়েই এই প্রকল্প। তাই জিপি কৃষিসেবা; কৃষকের সুদিনের শুরু এখানেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে গ্রামীণফোনের এই কর্মকর্তা জানান, যেকোনো গ্রামীণফোন নম্বর থেকে ২৭৬৭৬ নম্বরে কল করে কৃষককে তার এলাকা ও পছন্দের শস্য, মাছ, গবাদি পশুর নাম নির্বাচনের মাধ্যমে এ সেবায় নিবন্ধন করতে হবে। এক্ষেত্রে একজন কৃষক সর্বোচ্চ তিনটি টাইপ বেছে নিতে পারবেন।
কৃষক যে অঞ্চলে অবস্থান করছেন সেই অঞ্চলের সঙ্গে মিল রেখে তিনি যে শস্য, মাছ, গবাদিপশু উৎপাদন করতে চান সে বিষয়ে তথ্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি শস্য বর্ষপঞ্জি ও ঋতুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেও তথ্য দেওয়া হবে।
তাই রাজশাহী অঞ্চলের কোনো কৃষক যদি তার এলাকার আবহাওয়া অনুযায়ী তেলাপিয়া মাছ চাষের তথ্য জানতে চান তাহলে জিপি কৃষিসেবা শস্য বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী তথ্য দেবে। এই তথ্য হবে আইভিআর (ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স) ও ভয়েস ম্যাসেজ ভিত্তিক যা তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাবেন।
এ সেবা পেতে প্রতি সপ্তাহে খরচ হবে ৫ টাকা। এছাড়াও গ্রাহকরা এগ্রো কল সেন্টারে ফোন করে কৃষি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন প্রতি মিনিট ৩ টাকা করে। এই সেবার জন্য নিবন্ধিত গ্রাহকরা যেকোনো অপারেটরে ১ পয়সা সেকেন্ডে কল করতে পারবেন।
এছাড়া এ সেবার জন্য নিবন্ধনকৃত যেকোনো কৃষক লাল তীর বীজের প্যাকেট কিনে বিনামূল্য ইউএসএসডি মেনুর মাধ্যমে বীজের প্যাকেটটি আসল কিনা অথবা ক্রয়কৃত বীজের প্যাকেটে কোনো ভেজাল আছে কিনা সে বিষয়ে জানতে পারবেন বলেও তিনি জানান।
এ সময় রিজিওনাল হেড (বগুড়া) পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য, লিড ম্যানেজার (বগুড়া) ইসমাইল হোসেন, কামরুল হাসান, তানভীর আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এমবিএইচ/এসআর