ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

শিক্ষায় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন না এলে জনসংখ্যা বোঝা হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
শিক্ষায় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন না এলে জনসংখ্যা বোঝা হবে বেসিস কার্যালয়ে গোলটেবিল বৈঠক

ঢাকা: ডাক ও টেলি যোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রযুক্তি ব্যবহারে সব সেক্টর যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করলেও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই সেক্টরে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার নেই বললেই চলে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা এই ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পারিনি।

এই অবস্থার উন্নতি করতে না পারলে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ডিজিটাল যুগের কর্মসংস্থানে অযোগ্য হয়ে পড়বে। এই বিশাল জনসংখ্যা আমাদের ঘাড়ের ওপর বোঝা হিসেবে চেপে বসবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরেমশন সার্ভিসেস (বেসিস) কার্যালয়ে ‘বৈশ্বিক অর্থায়ন ব্যবস্থায় ব্লক চেইন- বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মোস্তাফা জব্বার। ই-জেনারেশন লিমিটেড এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

সম্প্রতি দুবাই ভিত্তিক ফিনটেক কোম্পানি ‘স্মার্ট ক্রাউড’ এর জন্য ব্লকচেইন ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভিত্তিক ডিজিটাল বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে ই-জেনারেশন লিমিটেড।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, গত ৯ বছরে আমাদের অসাধারণ কিছু অর্জন আছে। অনেক বড়বড় কাজ হয়েছে। নতুন নেতৃত্বের দায়িত্ব হলো এর ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া। প্রযুক্তি যতক্ষণ না মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে, জনগণ যতক্ষণ না তা ব্যবহার করছে, ততক্ষণ প্রযুক্তি কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না।

মন্ত্রী বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে আমাদের অসাধারণ কিছু অর্জন আছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা, মোবাইল ফোন ব্যবহার, মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা কাগজহীনভাবে হাতবদল হওয়া, কল্পনার চাইতেও কিছু বেশি অর্জন। কিন্তু শিক্ষাখাতে বলতে গেলে কোনো অর্জনই নেই। দ্রুত এই অবস্থার উন্নতি করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এখন কর্মী তৈরির পাশাপাশি সৃজনশীল খাতেও আমাদের নজর দিতে হবে। এজন্য আমাদের সাকসেসগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে হবে। এতে প্রযুক্তির বাজারে আমাদের দাপট বাড়বে। ব্লকচেইনের মতো নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার সাকসেসফুললি কাজে লাগাতে পারলে এই খাতের আয় এক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির কাছাকাছিও নেওয়া সম্ভব।

গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ই-জেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান। বাংলাদেশে ব্লকচেইনের সম্ভাবনা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএম আশরাফুল ইসলাম ও সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তিবিদ, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও ইউপ্লাস ইনকর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী শওকত শামীম।

এতে আরো অংশ নেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক একেএম আফতাবুল ইসলাম ও ড. জামাল উদ্দীন।

সভাপতির বক্তব্যে শামীম আহসান বলেন, গণমাধ্যমে ইন্টারনেট যেমন ভূমিকা রাখছে, ব্যাংকিংখাতে ব্লকচেইন তেমনই ভূমিকা রাখবে। স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং, রিয়েলস্টেট এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এই প্রযুক্তি।

মূল প্রবন্ধ উত্থাপনকালে আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে আমরা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি, ২০১৮ সালে তা অনেকটাই বদলে যাবে। ডাটার ওপেন এক্সেস এর কারণে কপিরাইট সংরক্ষণ একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে ব্লকচেইন একটি বড় ভূমিকা রাখবে। আমাদের ভূমী রেকর্ড ব্যবস্থাপনায়ও ব্লক চেইন বড় ভূমিকা রাখবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের জীবনে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়বো।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
আরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।