ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ডিএনসিসির অ্যাপস ‘নগর’ এর অস্তিত্ব নেই!

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
ডিএনসিসির অ্যাপস ‘নগর’ এর অস্তিত্ব নেই! প্রতীকী ছবি।

ঢাকা: নাগরিক সেবা আরো সহজ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালের ২ আগস্ট মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক ডিজিটাল সেবা ‘নগর’ চালু করেছিলেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। উদ্দেশ্য ছিলো নাগরিক সেবা হাতের মুঠোয় আনা। যেন নাগরিকরা সহজেই তার প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন এবং সমস্যার দ্রুত সমাধান পেয়ে যান।

আনিসুল হক জীবিত থাকাকালীন সময়ে অনেকেই এ অ্যাপের মাধ্যমে সেবা পেতে শুরু করেছিলেন। কেউ কোথাও ময়লার স্তূপ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ছবি তুলে সেই ছবি পাঠিয়ে দিতেন ‘নগর’ এর অভিযোগ বক্সে।

আর সঙ্গে সঙ্গে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, ওই অঞ্চলের বর্জ্য ব্যবস্থাপকের কাছে চলে যেতো। যা অবগত হতেন মেয়রও।

ফিরতি বার্তায় থাকতো সমাধানের কথা। এমন সুন্দর সমাধান যাত্রা ‍শুরু করেও ধরে রাখতে পারেনি ডিএনসিসি। মেয়র আনিসুল হক অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই অ্যাপটি কার্যত অচল ছিলো। এরপর তার মৃত্যুর পর খোদ ডিএনসিসি’র কোথাও অ্যাপটির অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি এরকম একটি অ্যাপস আছে সে তথ্যই জানেন না বর্তমান প্যানেল মেয়র ওসমান গণি।

প্যানেল মেয়র ওসমান গণির কাছে নগর অ্যাপসের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অনেকটা হতবাক হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার একান্ত সচিব (পিএস) মোহাম্মাদ আবরাউল হাছান মজুমদারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান।

আবরাউল হাছান বর্তমানে প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তার পাশাপাশি ডিজিটাল এ সেবার দায়িত্ব রয়েছেন। একাই সামলান তিন বিভাগ।

আবরাউল হাছান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ওয়েবসাইটে একটু সমস্যা থাকায় বর্তমানে অ্যাপসভিত্তিক এ সেবায় একটু সমস্যা রয়েছে। তবে বিষয়টি দেখছি। এরপর এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও ‘নগর’ অ্যাপসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

ডিএনসিসির উদ্যোগে ‘নগর’ অ্যাপটি তৈরি করে বাংলাদেশ ইউ‌নিভা‌র্সি‌টির (বিইউ) আরবান ল্যাব। নাগরিক সেবাবিষয়ক তথ্য ছাড়াও নগর অ্যাপের নিরাপত্তা ফিচার ব্যবহার করে প্রিয়জনের গতিবিধি ও অবস্থান জানা যেতো। কেউ বিপদে পড়লে মাত্র তিন সেকেন্ড অ্যাপের ‘সেভ আওয়ার সোল বা এসওএস’ আইকন চেপে ধরলে স্যাটেলাইটের সহায়তায় পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও কাছের পুলিশ স্টেশনে বিপদ সংকেত বেজে ওঠার অপশন ছিলো। আক্রান্ত ব্যক্তির ছবি, অবস্থান ও কণ্ঠ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে যাবে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে এমন সুবিধা দিতেই অ্যাপটি চালু করা হয়। অ্যাপটির ট্র্যাকিং সুবিধা ব্যবহার করে প্রিয়জনের গতিবিধি ও অবস্থান জানা যেতো। এছাড়া কাছের হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, ফায়ার সার্ভিস, এটিএম বুথসহ জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা জানার ব্যবস্থা ছিলো।

অ্যাপটির মাধ্যমে এলাকার রাস্তা, সড়কবাতি, বর্জ্য, ড্রেনেজ, মশা, অবৈধ দখল, ঘুষ ও দুর্নীতি এ সাতটি অভিযোগ বা মতামত সরাসরি সিটি করপোরেশনে পাঠানোর সুযোগ ছিলো। মোবাইলে ছবি তোলার পর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে যেতো। সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন জোনে থাকা বড় পর্দায় প্রতিটি অভিযোগ ও মতামত দেখা যেতো। অভিযোগের প্রকার বিশ্লেষণ করে সিটি করপোরেশন সমাধানের যে উদ্যোগ নেবে, সেটিও জানা যেতো। সমস্যার সমাধান হলে অভিযোগকারী স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিষয়টি জানতে পারতেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
এসএম/ওএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।