ঢাকা: বাংলাদেশের দুই হ্যাকার গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সর্ববৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। হ্যাকার গ্রুপ দু’টি হচ্ছে ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশন (ক্র্যাফ) এবং ডিফেন্স অব নেশন্স (ডনস)।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ফেসবুকের সাইবার নিরাপত্তা নীতির প্রধান নাথানিয়েল গ্লেইঞ্চার এবং সাইবার ঝুঁকি গোয়েন্দা ব্যবস্থাপক মাইক ভিলিয়ানস্কি এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
এতে বলা হয়, ফেসবুকের সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি বিশেষজ্ঞরা অসৎ প্রচারণা, অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যদের প্রভাবিত করা, অন্যদের একাউন্ট অবৈধভাবে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করার মতো ঘটনার জন্য কাজ করে থাকেন। এ কাজের অংশ হিসেবে সম্প্রতি আমরা বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনাম থেকে এমন কিছু গ্রুপের সন্ধান পাই। ইপিটি ৩২ নামের ভিয়েতনামি গ্রুপটি ফেসবুক অসৎ প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করেছিল।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের দু’টি গ্রুপ অন্য ব্যক্তিদের আইডি এবং পেইজের অবৈধ দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিল। এর জন্য তারা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত আইডি ও পেইজ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ‘রিপোর্ট’ করে যাচ্ছিল। তবে ভিয়েতনামের গ্রুপটির সঙ্গে বাংলাদেশের গ্রুপ দু’টির এখনও কোন যোগসাজশ পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের গ্রুপ দু’টির পরিচয় তুলে ধরে ফেসবুক জানায়, বাংলাদেশের এ গ্রুপ দু’টি আমাদের কমিউনিটি নীতিমালা ভঙ্গ করার চেষ্টা করেছিল। ডনস এবং ক্র্যাফ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন আইডি এবং পেইজ নানান অজুহাতে রিপোর্ট করতে থাকে। আইডি ডিজাবেল (নিষ্ক্রিয়) করার পর সেসব আইডি ও পেইজের দখল নিতে কাজ করতো এ গ্রুপ দু’টি।
এ ধরনের কাজে গ্রুপ দু’টি সফল হয়েছে বলেও জানায় ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি বলছে, তারা এ ধরনের কিছু ব্যক্তির আইডি ও পেইজ হ্যাক করেছে এবং সেগুলোর ব্যবহারও করেছে। একাউন্টের দখল নিতে একাউন্টের বৈধ ব্যবহারকারীর ইমেইল এবং ডিভাইস (মোবাইল বা কম্পিউটার) ব্যবহার করেছে হ্যাকাররা।
বাংলাদেশ সহ ভিয়েতনামের এ গ্রুপগুলো এরই মধ্যে মুছে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেসবুক। প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এসব গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইডি ও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে যাদের একাউন্ট ও পেইজ হ্যাক হয়েছে তাদেরও অবহিত করেছে ফেসবুক। আর ব্যবহারকারীদের নিজেদের নিরাপত্তায় আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের নেটিজেনদের মধ্যে ক্র্যাফ এবং ডনস দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুক কমিউনিটি হিসেবে কাজ করে আসছিল। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সাইবার সমস্যায় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করার দাবি করে আসছিল গ্রুপ দু’টি। ফেসবুকের এমন পদক্ষেপ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাইবার বিশেষজ্ঞ বলেন, হ্যাকিং সাধারণত দুই ধরনের। অ্যাথিক্যাল হ্যাকিং এবং আন অ্যাথিক্যাল হ্যাকিং। হ্যাকার ও তেমনি। আমাদের দেশের অনেকেই এথিক্যাল হ্যাকার হিসেবে কাজ করেন। তারা দেশের প্রয়োজনে দেশের বাইরে অপারেশন করেন। কিন্তু আন এথিক্যাল হ্যাকাররা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে অবৈধ উদ্দেশ্যে কাজ করে। ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠান এসব বিষয়ে শক্ত নীতিমালা মেনে চলে। এ পদক্ষেপ তারই অংশ।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
এসএইচএস/ওএইচ/