ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

সামাজিক মাধ্যম আইনে যা থাকতে পারে

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২১
সামাজিক মাধ্যম আইনে যা থাকতে পারে

ঢাকা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মগুলোকে আইনি কাঠামো আর জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। সেই আইনে কী ধরনের নীতিমালা বা বিধান থাকছে সেটিই এখন আগ্রহের বিষয়।

 

জানা গেছে, গুজব, মিথ্যাচার ও দেশবিরোধী অপপ্রচারের মতো অপরাধ রোধ করতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে এই আইনে।

আইনটি তৈরিতে কাজ করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।  

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সম্পর্কিত অন্যান্য দেশের আইন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আইনের খসড়া হয়ে গেলে তার ওপর স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) মতামত নিয়ে তা চূড়ান্ত করা হবে।

জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলানিউজকে বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের আইন প্রণয়ন করা হবে, তবে বর্তমানে গুজব, মিথ্যাচার, দেশবিরোধী অপপ্রচার রোধ করার পন্থাসমূহ যাচাই করা হচ্ছে। এমন আইন যথেষ্ট সংবেদনশীল বিবেচনায় কেবলমাত্র আইনি দিকসমূহ এবং অন্যান্য দেশের আইন ও অভিজ্ঞতা বর্তমানে পরীক্ষাধীন রয়েছে। সব বিষয় বিবেচনায় রেখে খসড়া আইন করা হবে যা অংশীজনের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের আইন প্রণয়নের অংশ হিসেবে অংশীজনের মতামত সব ক্ষেত্রেই গ্রহণ করা হয়। এ আইন প্রণয়নেও এর কোনো ব্যাত্যয় ঘটবে না।

এমন আইনের মাধ্যমে গুজব, রাষ্ট্র বিরোধী কন্টেন্ট বন্ধ করা সম্ভব কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে পলক বলেন, যে কোনো আইনের মাধ্যমে গুজব, রাষ্ট্র বিরোধী কন্টেন্ট বন্ধ করার বিষয়ে কন্টেন্টের গুরুত্ব বিবেচনা করা হয়। সাধারণত কম ক্ষতিকারক কন্টেন্টের ক্ষেত্রে পাল্টা ব্যাখ্যা (Counter Narrative) প্রদান করে জনসাধারণকে বিভ্রান্তিকর কন্টেন্টের বিষয়ে স্পষ্ট করা হয়। এ আলোকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ‘আসল চিনি’ শীর্ষক সচেতনতামূলক প্রচারণা আয়োজন করে। কন্টেন্ট বন্ধ করার বিষয়ে আইনি কাঠামোকে সুদৃঢ় করার পাশাপাশি কারিগরি সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচ্য। এ বিষয়ে সরকার বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবতা যাচাই করছে। আইনি কাঠামো ও কারিগরি দক্ষতা বাড়ার মাধ্যমে এ কন্টেন্ট বন্ধ করা সম্ভব হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে দেশে অফিস বা শাখা অফিস খোলার কোন বাধ্যবাধকতা থাকবে কিনা প্রস্তাবিত আইনে, এমন প্রশ্নের জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি বিবেচনাধীন। তথ্যের স্থানীয়করণের (ডাটা লোকালাইজেশন) বিষয়টি খসড়া আইন প্রস্তুত হলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এ মুহূর্তে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না বলা গেলেও একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ডাটা লোকালাইজেশনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মসমূহকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া হবে।

ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মগুলোকে নিয়ে আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আইটি ও আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। তবে অপরাধ রোধে আইনের পাশাপাশি সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানোরও পরামর্শ দেন তিনি। আলমাস বলেন, মিথ্যা, অপপ্রচার বা গুজব ছড়ানো প্রতিহত করতে সঠিক তথ্য জনগণকে বেশি বেশি আর সহজে জানাতে হবে। এরজন্য আইসিটি বিভাগ কাজ করছে এবং তাদের প্রকল্পও আছে। তবে ফিল্টারিং বা তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যদি এগুলো করা হয় তাহলে সেটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সংকটে ফেলে। এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের এখানে এখনই অফিস খোলা না গেলেও সার্ভার বসানোর জন্য প্রয়োজনে শক্ত আইন করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২১
এসএইচএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।