ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

বাংলাদেশে শিগগিরই অফিস খুলবে না ফেসবুক

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২১
বাংলাদেশে শিগগিরই অফিস খুলবে না ফেসবুক

ঢাকা: বাংলাদেশে শিগগিরই অফিস খোলার পরিকল্পনা নেই বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের। তবে দেশে অফিস ও সার্ভার রয়েছে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম লাইকির।

 

বাংলাদেশের অফিস খোলার পরিকল্পনার রয়েছে তাৎক্ষণিক বার্তা আদান প্রদানের মাধ্যম ইমো’র।  

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে আইন প্রণয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। জানা যায়, এ আইনে প্ল্যাটফর্মগুলোকে বাংলাদেশে অফিস বা শাখা অফিস খোলা ও চালুর বিধান রাখা হবে। এছাড়া বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে দেশের ব্যবহারকারীদের তথ্য দেশেই রাখতে দেশে সার্ভার স্থাপনের ওপর।  

এগুলোসহ আসন্ন আইনের সম্ভাব্য কিছু দিক নিয়ে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয় বেশ কয়েকটি ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মের কাছে। এগুলোর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক, স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম লাইকি এবং বার্তা আদান প্রদানের তাৎক্ষণিক মাধ্যম ইমো রয়েছে।

বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার জন্য ফেসবুকের কমিউনিকেশন ম্যানেজার শেহজিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে আমাদের কমিউনিটিগুলোকে সহায়তা করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দেশের নীতিনির্ধারকসহ বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে আমরা কাজ করি, যাতে করে ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ হয়। সেই সঙ্গে আমাদের কমিউনিটিগুলো যাতে বিভিন্ন ফিচার ব্যবহার করে নিজেদের নিরাপদ রাখতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। তবে শিগগিরই বাংলাদেশে অফিস খোলার পরিকল্পনা আমাদের নেই। আর অফিস থাকা না থাকার ওপর সে দেশের কাজে তেমন কোনো প্রভাব পড়ে না। পৃথিবীর অনেক দেশেই আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি এবং সবখানেই আমাদের অফিস নেই।  

অন্যদিকে এক ই-মেইল বার্তায় বাংলাদেশে লাইকির জনসংযোগ এজেন্সি থেকে পাঠানো উত্তরে লাইকি আসন্ন আইন প্রণয়নের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে বলে উল্লেখ করা হয়। লাইকি জানায়, হ্যাঁ, লাইকি এ ব্যাপারে অবগত। দায়িত্বশীল ব্র্যান্ড হিসেবে, লাইকি সব সময় স্থনীয় আইন ও বিধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ভবিষ্যতেও এ ব্যাপারে আমাদের একই অবস্থান বজায় থাকবে। আমরা সব সময় সরকার এবং সরকারের সব সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সহযোগিতা করতে আগ্রহী ছিলাম এবং এখনও আছি।   

বাংলাদেশে লাইকির নিজস্ব সার্ভার রয়েছে বলেও জানানো হয় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। একইসঙ্গে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার কোনো আইন প্রণয়ন করলে সরকারকে সহযোগিতা করবে বলেও জানায় প্ল্যাটফর্মটি। লাইকির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে লাইকি। এজন্য, বাংলাদেশে আমাদের ব্যবহারকারীদের তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে বাংলাদেশে আমাদের সার্ভার রয়েছে। লাইকি সর্বদা স্থানীয় সরকার ও স্থানীয় আইন ও বিধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সর্বদা সরকারকে সহযোগিতায় বিশ্বাসী। ব্যবহারকারীদের উন্নত অভিজ্ঞতা প্রদান করা ছাড়াও, আমরা ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করি। যেসব বিষয় আমাদের নীতিমালা ও শোভনীয়তার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় কিংবা যেসব বিষয়ের শোভনীয়তার মানদণ্ড থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে, লাইকিতে সে বিষয়গুলো প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত, নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে লাইকি মোট ৪২ হাজার ৭৫১টি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে, প্রায় ৮৭ লাখ ভিডিও প্রতি মাসে পেনাল্টির সম্মুখীন হয়েছে; যা বাংলাদেশ সরকারের অনলাইন পরিবেশ সুরক্ষিত রাখার আহ্বানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

অন্যদিকে বাংলাদেশে নিজস্ব কার্যালয় চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় ইমো। ইমো জানায়, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম ইমো থেকে জানানো হয়, ইমো যে দেশ বা অঞ্চলেই কার্যক্রম পরিচালনা করুক, সেখানকার আইন ও বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে সর্বদা সচেষ্ট। বিশ্বজুড়েই ইমো নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আমাদের স্থানীয় অফিস চালু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এদেশে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত ইন্টারনেট ইকোসিস্টেম তৈরিতে আমরা ধারাবাহিক বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্ব করে যাব।

তবে সরকারের বিভিন্ন অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তথ্যগত সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে এখনও নিজস্ব নিয়মেই হাঁটছে ফেসবুক। সরকার ফেসবুকের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সাহায্য পায় না এমন বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানটির একটি সূত্র জানায়, সরকারের তথ্য সহায়তা বিষয়ক যে অনুরোধগুলো আসে, সেগুলো আমরা প্রযোজ্য আইন ও আমাদের নিজস্ব শর্তের আলোকে বিবেচনা করে উত্তর দেই। প্রতিটি অনুরোধ আমরা আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি এবং আমরা চাইলে সেগুলো বাতিল করে দিতে পারি। আর যেসব অনুসন্ধানের বিষয় পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, সেগুলোর বিষয়ে আমরা অধিকতর তথ্য চাই। তবে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্টের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে আমাদের প্রায় ১৫ হাজার লোকবল কাজ করছেন, যারা কনটেন্ট পর্যবেক্ষণ করেন। তারা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কাজ করার পাশাপাশি স্থানীয় ভাষা সম্পর্কেও পারদর্শী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় আমরা আরও বেশি বিনিয়োগ করছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২১
এস এইচ এস/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।