ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘মা বেঁচে ছিলেন, কিন্তু কেউ উদ্ধার করতে আসেনি’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
‘মা বেঁচে ছিলেন, কিন্তু কেউ উদ্ধার করতে আসেনি’

তুরস্কে ভূমিকম্পের আজ সপ্তম দিন। সপ্তাহ পার হলেও প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে মরদেহের সারি।

সেই সঙ্গে বাড়ছে ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ। তাদের অভিযোগের আঙুল দেশটির সরকারের দিকে।

আনতাকিয়া এলাকার বাসিন্দা জাফের মাহমুত বনকুক, বয়স ৬০। বিধ্বংসী ভূমিকম্পে যখন তাদের ভবনটি ধসে পড়ে, তখন তিনি আবিষ্কার করেন যে তার ৭৫ বছর বয়সী মা এখনও বেঁচে আছেন। তবে তিনি ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন।

দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে বনকুক জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মাকে উদ্ধারের জন্য অনেকের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। তবে এমন কোনো সাহায্য বিধ্বস্ত আনতাকিয়া শহরে তিনি পাননি।

বনকুক তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার হাত ধরে পানি পান করাতেও সক্ষম হয়েছিল। তার অনুরোধ সত্ত্বেও সাহায্যের জন্য কেউ আসেনি। ভূমিকম্পের পরের দিন মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বনকুকের মা মারা যান।

তুরস্কের অন্য অনেকের মতোই, বনকুকের কষ্ট, বিপর্যয় এখন ক্ষোভে পরিণত হয়েছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বনকুক জানান, তার মাকে উদ্ধার খুব সহজ ছিল, কিন্তু কেউ আসেনি। ভবনটি ধসে পড়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর অবশেষে রোববার তার মায়ের মরদেহ সরিয়ে ফেলা হয়। তার বাবার মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।

চিৎকার করে প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যদি আপনার নিজের মা হতো তাহলে কী করতেন প্রিয় রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান? বিশ্বনেতা হয়ে কী হলো? আপনি কোথায়? কোথায়?

তিনি বলেন, আমি মাকে পানি পান করিয়েছিলাম। আমি তার ধ্বংসস্তূপের মুখ পরিষ্কার করেছিলাম। বলেছিলাম যে আমি তাকে বাঁচাব। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি।

তিনি এপিকে বলেছেন, শেষবার যখন আমরা কথা বলেছিলাম, আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম, কিছু জল পান করবেন কিনা। তিনি বললেন না। তাও আমি তার ঠোঁটে কিছুটা পানি দিলাম। তার ১০ মিনিট পর মা মারা যান। আমার চোখের সামনে মা মারা গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।