ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বাসার নিচে বাংকার বানাতে চান ইউরোপের বিত্তবানরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
বাসার নিচে বাংকার বানাতে চান ইউরোপের বিত্তবানরা ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধ ও মহামারি থেকে বাঁচতে ইউরোপের বিত্তবানরা নিজেদের বাসার নিচে শেল্টার হিসেবে বাংকার বানাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাদের এমন চাহিদার উপর ভিত্তি করে পোল্যান্ডের ডাভিড রিবিকি নামে এক ব্যক্তি নিরাপত্তার অভিনব ব্যবস্থা করছেন।

সম্প্রতি তার কোম্পানি বাংকার ও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে সুরক্ষার শেল্টার তৈরির কাজ শুরু করেছে৷ একটি সিঁড়ি দিয়ে ভবিষ্যতে মাটির নিচে বাংকার নেমে যাওয়া যাবে৷ আজ সে বাংকারের সামনের দরজা তৈরি হচ্ছে৷

এ মুহূর্তে ওই বাংকারে ওয়েল্ডার বুলেটপ্রুফ এআর ইস্পাত দিয়ে শেল্টারের স্টিল হ্যাচ ওয়েল্ডিং করছেন ডাভিড রিবিকি৷ যার ভেতরেও বাড়তি তালা রয়েছে৷ মোট ছয়টি তালা থাকায় বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না৷ পরিবারের সঙ্গে এখানে লুকিয়ে থাকা যায়৷ ওয়েল্ডিংয়ের কোনো প্রয়োজন নেই৷ ট্রাকে করে তুলে এনে কংক্রিটের খাঁজে নামিয়ে দেড় মিটার মাটি চাপা দিলেই হবে৷

গ্রাহকের বাড়ির পেছনে ফলআউট শেল্টার তৈরি করা হয়েছে৷ সে প্রণালীর মধ্যে আপদকালীন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে এক ডিজেল জেনারেটর রয়েছে৷ বাতাস নির্মল রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে৷ 

ডাভিড রুবিকি বলেন, বাইরে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটলে এ প্রণালী গামা রশ্মির প্রতিটি রেডিয়েশন পার্টিকেল বা কণা ফিল্টার করে৷ শেল্টারের মধ্যে বাতাস চালান করা হয়৷ একেবারেই কোনো বিদ্যুৎ না থাকলে হাতে করে বিদ্যুৎ সৃষ্টির উপায়ও রয়েছে৷

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে প্রতি ঘণ্টায় ২০ মিনিট ধরে হ্যান্ড ক্র্যাংক ঘোরালে তাজা বাতাস প্রবেশ করবে৷ বিলাসবহুল এ ফলআউট শেলটারে আটজন পর্যন্ত মানুষ ভালোভাবেই বাস করতে পারেন৷ শয়নকক্ষে, বাথরুম, রান্নাঘর ও বসার ঘরও রয়েছে৷ এমন সুরক্ষার মূল্য সাড়ে তিন থেকে ছয় লাখ ইউরো হতে পারে৷

কিন্তু ক্রেতারা কেন এমন বাংকার তৈরি করাতে চান? ফেরোপ্লাস্ট কোম্পানির কর্ণধার রুবিকি এমন চাহিদা ব্যাখ্যা করে বলেন, দুই বছর আগে আমরা কোভিডের মুখে পড়েছিলাম৷ এখন যুদ্ধ চলছে৷ কেউ ভাবেনি, যে ইউরোপে যুদ্ধ হবে৷ কিন্তু এখন সেটাই ঘটছে৷ চীন ও তাইওয়ান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত রয়েছে৷ এখন মিডিয়ায় শুনছি যে খাদ্য সংকট আসছে৷ পানির সংকট৷ কেউ জানে না কী ঘটতে চলেছে৷ তাই নিরাপদ বোধ করতে হলে আমরা সে সমাধানসূত্র দিচ্ছি৷

আমেরিকার ক্রেতা ও জার্মান ডিসট্রিবিউটারদের জন্য বাংকার তৈরি করেন ডাভিড রিবিকি৷ যেমন বার্লিন-ভিত্তিক বিএসএসডি কোম্পানি তার গ্রাহক৷ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে৷

বিএসএসডি কোম্পানির মার্ক শ্মিশেন বলেন, আমাদের ওয়েবসাইটের ভিজিটের সংখ্যা দেখেও সেটি টের পেয়েছি৷ আগে দিনে প্রায় ১০০ ভিজিটার আসতো৷ আচমকা সেটা বেড়ে ১০,০০০ হয়ে উঠলো৷ ভাবতেই পারছেন এর কত বড় সম্ভাবনা রয়েছে৷ তখন আমরা ভাবলাম, যুদ্ধ হয়তো অনেকদিন ধরে চলবে৷ তারপর শেষ হবে৷ ফলে আগ্রহও কমে যাবে৷ কিন্তু বাস্তবে তার বিপরীতটাই ঘটলো৷

এ কোম্পানি বিভিন্ন মাপের বাংকার তৈরি করে৷ যেমন ছোট প্যানিক রুমের মূল্য ১৫,০০০ ইউরো৷ সেটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ডাভিড রুবিকি বলেন, এ ঘরে মাত্র আধ ঘণ্টা কাটানো যায়৷ সে কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে পুলিস অ্যালার্মও রয়েছে৷ কিছু ঘটলে আপনি পরিবারসহ সেখানে আবদ্ধ হয়ে বোতাম টিপে শুধু অপেক্ষা করতে পারেন৷

সূত্র: ডিডাব্লিউ

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।