ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

স্বাধীনতার ৫০ বছরে কঙ্গো: সামনে নাকি পেছনে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩:২৬, জুন ২৯, ২০১০

কিনশাসা: মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উৎসব চলছে সপ্তাহ জুড়ে। ১৯৬০ সালের ৩০ জুন বেলজিয়ামের ৮০ বছরের শাসন-শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয় দেশটি।

এরপরেও, যুদ্ধ, দুর্নীতি, দারিদ্র্যের কারণে স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি প্রচুর খনিজসমৃদ্ধ কঙ্গো।

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি বুন, বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় অ্যালবার্ট ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা ৫০ বছর পূর্তি উৎসবে উপস্থিত থাকবেন। আগামীকাল বুধবার এই পূর্তি উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

সরকারি নাম ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। দেশটির জাতীয় সঙ্গীতে রয়েছে, ‘জেগে ওঠো, আগের চেয়ে একটি সুন্দর দেশ গড়ো, শান্তিতে। ’ তবে, স্বাধীনতার অর্ধ শতকের পরেও এই আশা নিষ্ঠুরভাবে ধাক্কা খেয়েছে।

উপনিবেশিক-উত্তর ইতিহাসে দুর্নীতিগ্রস্ত জোসেফ মোবুতু সেসে সেকো’র শাসনে রক্তাক্ত হয়েছে কঙ্গো। ১৯৬৫ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জোসেঠ মোবুতু ক্ষমতায় এসে ৩২ বছর কঙ্গো শাসন করেন।

উত্তরাধিকার সূত্রে সোনা, তামা, কোবাল্ট ও হীরকের বিশাল ভাণ্ডার পেয়েছে কঙ্গো। অথচ এটাই দুনিয়ার সবচেয়ে গরীব দেশগুলোর একটি। ১৯৯৬ থেকে ২০০৩ সালের আট বছরে যুদ্ধে খোঁড়া হয়ে গেছে। ওই যুদ্ধে দেশের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে।

গণতান্ত্রিক নির্বাচনের চার বছর পরে প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলা দেশটিতে খানিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। প্রায় ৬ কোটি জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিদিনের আয় মাত্র ১ দশমিক ২৫ ডলার। এদিকে, কঙ্গোর বিশপরা একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘একটি সুন্দর কঙ্গোর স্বপ্ন ভুলুণ্ঠিত’ হয়েছে। তারা বলেন, কঙ্গো সামনের চেয়ে পেছনে এগিয়েছে বেশি।

দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এটাকে ‘আফিকা মহাদেশের মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। একইসঙ্গে কঙ্গোর পূর্ব অঞ্চলে বিরাজমান অস্থিরতা নিয়ে জোসেফ কাবিলার ব্যর্থতার ব্যাপারে সমালোচনা করেছে। ওই অঞ্চলে জাতিসংঘের প্রায় ২০ হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল শান্তিরক্ষার এই অভিযান।

চলতি মাসে জাতিসংঘ সেখান থেকে ২ হাজার শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে কঙ্গো চায়, ২০১১ সালের মধ্যে জাতিসংঘ তার পুরো বাহিনীকে প্রত্যাহার করে নেবে। যদিও জাতিসংঘ জানাচ্ছে, কঙ্গোর অভ্যন্তরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বিস্তৃত হচ্ছে, শিশু সেনারা সহিংসতায় অংশ নিচ্ছে, সাধারণ মানুষ যৌন সহিংতার শিকার হচ্ছে।

কঙ্গোর সরকার অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, চাকরি ও হাউজিংসহ নানা উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটাকে কেবল স্লোগান হিসেবেই দেখছেন।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১০
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।