ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বিবিসি যে কারণে হামাস সদস্যদের ‘সন্ত্রাসী’ বলছে না

আনর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
বিবিসি যে কারণে হামাস সদস্যদের ‘সন্ত্রাসী’ বলছে না গাজায় হামলা চলছেই। ছবি: গেটি ইমেজ

ইসরায়েল হামলা চালানো সশস্ত্র সংগঠন হামাসের অস্ত্রধারী সদস্যদের বিবিসি ‘টেররিস্টস’ বা সন্ত্রাসী না বলায় প্রশ্ন তুলেছেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী, কলামিস্টসহ সাধারণ লোকজন। তাদের প্রশ্ন কেন বিবিসি বলছে না যে, দক্ষিণ ইসরায়েলে ভয়ঙ্কর নৃশংসতা চালানো হামাসের অস্ত্রধারীরা ‘টেররিস্ট’।

গণমাধ্যমটির ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স এডিটর জন সিম্পসন এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সংক্ষিপ্ত আকারে তা তুলে ধরা হলো।

জন সিম্পসন লিখেছেন, এই প্রশ্নের উত্তর গণমাধ্যমটির প্রতিষ্ঠাকালীন নীতিতেই রয়েছে। ‘টেররিজম’ বা সন্ত্রাসবাদ একটি চাপিয়ে দেওয়া শব্দ, যা মানুষ এমন কোনো সংগঠন সম্পর্কে বলে, যা তারা নৈতিকভাবে অপছন্দ করে। কাকে সমর্থন করতে হবে এবং কাকে নিন্দা করতে হবে - কে ভালো মানুষ, আর কে খারাপ মানুষ সেটি জানানো বিবিসির কাজ নয়।

তিনি লেখেন, আমরা নিয়মিত উল্লেখ করি যে, ব্রিটিশ ও অন্যান্য সরকার হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিন্দা করেছে, আর এটি তাদের কাজ। আমরা অতিথিদের সাক্ষাৎকারও প্রচার করি, যেখানে তারা হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করেন। মূল বিষয় হলো, আমরা এটি আমরা নিজের কণ্ঠে বলি না। আমাদের কাজ হলো, শ্রোতা-পাঠক কাছে তথ্য উপস্থাপন করা এবং তাদের নিজেদের মানসিকতা তৈরি করা।

অভিজ্ঞ এই সাংবাদিক লেখেন, ৫০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করছি। ইসরায়েলে এ ধরনের হামলার পরিণতি আমি দেখেছি এবং লেবানন ও গাজার বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিণতিও আমি নিজে দেখেছি। আপনি আপনার মন থেকে এ ধরনের ভয়াবহ জিনিস কোনোদিন মুছে ফেলতে পারবেন না। কিন্তু এর মানে এই নয়, যে সংগঠনের সমর্থকেরা এগুলো চালিয়েছে, তাদের টেররিস্ট সংগঠন বলা আমাদের শুরু করা উচিত। কারণ তার অর্থ হবে বস্তুনিষ্ঠ থাকার দায়িত্ব ত্যাগ করা।  

তিনি লেখেন, বিবিসি সব সময়ই এমন ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিবিসির প্রতিবেদকদের স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছিল, নাৎসিদের মন্দ বা খারাপ না বলতে। সর্বোপরি, বিবিসির একটি নথিতে বলা হয়েছে, বাগাড়ম্বর করার কোনো জায়গা নেই। আমাদের শান্ত ও ধীর থাকতে হবে। আমরা কারো পক্ষ নিই না। আমরা কোনো ‘মন্দ’ বা ‘কাপুরুষতা’র মতো চাপিয়ে দেওয়ার মতো শব্দ ব্যবহার করি না। আমরা ‘টেররিস্টস’ নিয়ে কিছু বলি না।

জন সিম্পসন লেখেন, শুধু আমরাই নই, বিশ্বজুড়ে নন্দিত আরও অনেক গণমাধ্যও ও সংবাদ সংস্থাও এই নীতি মেনে চলে। কিন্তু এর মধ্যে বিবিসি বিশেষ মনোযোগ পায়, যার একটি কারণ হতে পারে, যুক্তরাজ্যের রাজনীতি, গণমাধ্যমে সমালোচকেরা আছেন। আরেকটি হতে পারে এ ধরনের বিষয়গুলো প্রচারের ক্ষেত্রে আমরা যতটা সম্ভব বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার নীতি ধরে রেখেছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।