ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘যেকোনো মুহূর্তে’ পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করতে প্রস্তুত রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪
‘যেকোনো মুহূর্তে’ পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করতে প্রস্তুত রাশিয়া

রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা প্রধান রিয়াল অ্যাডমিরাল আন্দ্রেই সিনিটসিন বলেছেন, তার দেশ যেকোনো মুহূর্তে পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করতে প্রস্তুত। তারা সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের আদেশের অপেক্ষায় আছেন।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯০ সাল থেকে মস্কো পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়নি। হঠাৎ দেশটি কেন পারমাণবিক পরীক্ষা নিয়ে নড়ে-চড়ে বসেছে সেটি এখন আলোচনার কেন্দ্রে

বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, পশ্চিমারা যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে দেয় সেক্ষেত্রে রাশিয়া তাদের ‘গোপন সুবিধা’ ব্যবহারের চিন্তা করবে।

তারা বলছেন, ইউক্রেন যদি পশ্চিমা দেশগুলোর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে, আর তা যদি রাশিয়ার ভেতরে আঘাত হানে; প্রতিশোধ হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ব্রিটিশ সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানতে পারেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে একটি পারমাণবিক পরীক্ষাও করতে পারেন।

আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমের মঙ্গলবারের প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা নতুন ও বিপজ্জনক ধাপে প্রবেশ করেছে। এর আগে গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈঠকে বসেন। সেখানে দূরপাল্লার মার্কিন এটিএসিএমএস বা ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয়। এসব অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার স্থানটি আর্কটিক মহাসাগরের দূরবর্তী নোভায়া জেমলিয়া দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত। সেখানে ১৯৬১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এমনকি পরীক্ষা করা হয় ২০০টিরও বেশি পারমাণবিক অস্ত্র।

গত মঙ্গলবার রিয়ার অ্যাডমিরাল আন্দ্রেই সিনিটসিন রুশ সরকারের অফিসিয়াল সংবাদপত্র রসিয়স্কায়া গাজেতাকে পারমাণবিক পরীক্ষা সম্পর্কে কিছু তথ্য দেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন পশ্চিমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তারপরও যদি পশ্চিমারা ইউক্রেনকে হামলার অনুমতি দেয় তবে তারা রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ জড়াবে। ইউক্রেন রাশিয়ার ভূখণ্ডে পশ্চিমাদের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তাক করে রেখেছে। তারা প্রতিশোধ নেওয়ার কথাও বলেছে।

তিনি বলেন, আমরাও বসে নেই। প্রস্তুতিও রয়েছে। বিশেষ করে পারমাণবিক বিষয়ে। রাশিয়া যেকোনো মুহূর্তে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে প্রস্তুত। এটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। পরীক্ষাগার ও পরীক্ষার সুবিধা প্রস্তুত। কর্মীরাও প্রস্তুত। যদি আদেশ আসে, আমরা যেকোনো মুহূর্তে পরীক্ষা শুরু করতে পারি।

পশ্চিমাদের সতর্ক করে দেওয়ার পাশাপাশি ‘উপযুক্ত’ প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারেও অঙ্গীকার করেন পুতিন। যদিও তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কী করবেন তা প্রকাশ করেননি। ফলে পশ্চিমের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ পুতিনের ‘রেড লাইন’ না জানা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের ওপর হামলা বাড়ানোর মতো কিছু করতে পারেন বা ইউরোপে ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ বাড়াতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।