হোয়াইট হাউসে ফেরার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই তিনি একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশে সই করবেন। সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, শপথের পরই তিনি ঐতিহাসিক গতিতে এবং দৃঢ় শক্তি নিয়ে পদক্ষেপ নেবেন।
সোমবার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিষেকের আগের দিন রোববার ওয়াশিংটনে বিশাল এক সমাবেশে হাজির হয়ে ভাষণে আগামী চার বছরের পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেন এবং গত নভেম্বরের নির্বাচনে পাওয়া তার জয় উদযাপন করেন।
রিপাবলিকান এই নেতা প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতা ব্যবহার করে একতরফাভাবে বিভিন্ন বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন, যার মধ্যে রয়েছে ব্যাপক হারে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর অভিযান শুরু করা, পরিবেশবিষয়ক নিয়মকানুন শিথিল করা এবং ডাইভারসিটি প্রোগ্রাম বন্ধ করা।
তিনি বলেন, আমরা আমেরিকাকে প্রথমে রাখব, আর কাল থেকেই এর কাজ শুরু হবে। আপনারা আগামীকাল টেলিভিশন দেখে অনেক মজা পাবেন।
ট্রাম্প সোমবার দুই শতাধিক নির্বাহী পদক্ষেপে সই করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাহী আদেশ, যা আইনিভাবে বাধ্যতামূলক হবে। সেইসঙ্গে রয়েছে প্রেসিডেন্টের অন্যান্য নির্দেশনা, যা সাধারণত বাধ্যতামূলক হয় না।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের প্রতিটি উগ্র ও উদ্ভট নির্বাহী আদেশ শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাতিল করা হবে বলে জানান ট্রাম্প।
তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নত করা, সরকারের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য একটি বিভাগ গঠন করা (ডোজ), জন এফ কেনেডির হত্যা সম্পর্কিত রেকর্ড প্রকাশ করা, সামরিক বাহিনীকে আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া এবং সেনাবাহিনী থেকে বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তি নীতি বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ ছাড়া ট্রান্সজেন্ডার নারীদের, ‘নারী’ ক্রীড়া বিভাগে প্রতিযোগিতা বন্ধ করা এবং আমেরিকার রাজ্যগুলোর হাতে শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
প্রেসিডেন্টরা সাধারণত দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাহী আদেশ জারি করেন। তবে ট্রাম্পের প্রথম দিনের আদেশের সংখ্যা তার পূর্বসূরিদের তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে এবং এর অনেকগুলো আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সোমবার তার নির্বাহী পদক্ষেপগুলো অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলাকেন্দ্রিক হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি বিশাল লজিস্টিক বাধার সম্মুখীন হবে এবং সম্ভবত কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচও হতে পারে।
২০২১ সালের ছয়ই জানুয়ারি ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঘটনায় দোষী সাব্যস্তদের জন্য ট্রাম্প ক্ষমা ঘোষণা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ওই হামলার নেতৃত্বে তার সমর্থকরাই ছিলেন।
রোববারের বিজয় সমাবেশে ট্রাম্পের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও মঞ্চে যোগ দেন, যার মধ্যে ছিলেন ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, এরিক এবং এরিকের স্ত্রী লারা ট্রাম্প। সমাবেশে মার্কিন প্রযুক্তি খাতের ধনকুবের ইলন মাস্কও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
এদিকে রোববারের তুষারপাত ও তীব্র ঠান্ডার কারণে সোমবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আর বাইরে হচ্ছে না, যা গত ৪০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম।
ট্রাম্প সমাবেশে জানান, শপথ নেওয়ার পর তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেবেন। তার ভাষণের মূল বিষয় হবে ঐক্য, শক্তি ও ন্যায়বিচার।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
আরএইচ