পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়া পশ্চিমা বিশ্বের জন্য পুরোনো আতঙ্ক। দেশটি এবার সেই আতঙ্কের ভার বাড়ালো।
দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নিজের আঞ্চলিক মিত্রদের সামরিক হুমকি মোকাবিলার চেষ্টার অংশ হিসেবে এই শক্তি অর্জনের চেষ্টা করে আসছিল উত্তর কোরিয়া।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক আক্রমণকারী সাবমেরিন তৈরির খবর প্রকাশ করে দেশটি। সে সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জানান, ৮৪১ নম্বরের এই সাবমেরিনটি পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে এবং দূরপাল্লার ব্যালেস্টিক মিসাইল, অল্প দূরত্বের ব্যালেস্টিক মিসাইল, এমনকি ক্রুজ মিসাইলও ছুড়তেও পারে। দেড় বছর পর সেই পারমাণবিক সাবমেরিনের ছবি প্রকাশ করা হলো।
গত ৮ মার্চ উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডুবোজাহাজটিকে পারমাণবিক শক্তিচালিত কৌশলগত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। দেশটির নেতা কিম জং-উনের প্রধান জাহাজ নির্মাণকেন্দ্রে সাবমেরিনটি পরিদর্শনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তারিখবিহীন ছবিগুলিতে জাহাজ নির্মাণকেন্দ্রের অবস্থান প্রকাশ করা হয়নি। এর নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিম জং উনকে অবহিত করা হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে সাবমেরিনটির সুনির্দিষ্ট বিবরণ দেওয়া হয়নি।
নিউক্লিয়ার থ্রেট ইনিশিয়েটিভ অনুসারে, উত্তর কোরিয়ার কাছে পৃথিবীর অন্যতম বড় সাবমেরিন বহরগুলোর একটি রয়েছে। সেখানে আনুমানিক ৭০ থেকে ৯০টি সাবমেরিন রয়েছে। তবে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের দাবি, ওই বহরের বেশিরভাগ সাবমেরিন পুরোনো এবং সম্পূর্ণরূপে কার্যকর বা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম নাও হতে পারে।
২০২৪ সালে একটি নতুন আধুনিক নৌঘাঁটি নির্মাণও শুরু করেছিল উত্তর কোরিয়া। আগামী বছরগুলোতে ঘাঁটিটির ব্যবহার শুরু করার কথা রয়েছে। আরও বড় এবং আরও উন্নত যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিন ধারণ করার মতো করে ঘাঁটিটি ডিজাইন করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সাবমেরিন বিশেষজ্ঞ মুন কিউন-সিক সংবাদমাধ্যম এপিকে বলেছেন যে, উত্তর কোরিয়ার নতুন ওই সাবমেরিনটি ছয় হাজার টন বা সাত হাজার টন ওজনের একটি জাহাজ বলে মনে হচ্ছে, যা প্রায় দশটি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। তার মতে, সাবমেরিনের বর্ণনায় ‘কৌশলগত নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র’ কথাটি থাকায় মনে হচ্ছে যে, জলযানটি পারমাণবিক অস্ত্র বহনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তার দাবি, সাবমেরিনটি দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় হুমকি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৫
এসএএইচ