ইউক্রেন আবারও একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। কয়েকদিন আগেই দেশটির বিমান বাহিনী নিশ্চিত করেছে, পূর্বাঞ্চলে একটি অভিযানের সময় তারা একটি যুদ্ধবিমান ও সেটির পাইলটকে হারিয়েছে।
এই ক্ষতি শুধু ইউক্রেনের জন্য নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ভাবমূর্তির জন্যও একটি বড় ধাক্কা। কারণ ধ্বংস হওয়া যুদ্ধবিমানটি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এফ-১৬ মডেলের। ফলে প্রশ্ন উঠেছে—মার্কিন প্রযুক্তি ও সামরিক সহায়তা আদৌ কি ইউক্রেনের প্রয়োজনে যথেষ্ট?
এদিকে ইউক্রেনের একটি বড় সমস্যা হলো, প্রশিক্ষিত যুদ্ধবিমান চালকের ঘাটতি। নিহত পাইলট পাভলো ইভানভ এক সময় রাশিয়ান এসইউ-২৫ বিমানের চালক ছিলেন। পরে তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যুক্ত করা হয় মার্কিন এফ-১৬ বিমানের পাইলট হিসেবে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, বিমানটি রুশ বাহিনীর ছোড়া দূরপাল্লার আর-৩৭ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়। এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার এসইউ-৩৫, এসইউ-৫৭ কিংবা মিগ-৩১বিএম থেকে ছোড়া যেতে পারে এবং প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।
তবে বিকল্প একটি ব্যাখ্যাও উঠে এসেছে—সেটি হলো, ভুল করে হয়তো ইউক্রেনের নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই বিমানটিকে ভূপাতিত করেছে। যদিও ১৩ এপ্রিল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে, তাদের বাহিনী ইউক্রেনের একটি যুদ্ধবিমান, আটটি নির্দেশিত বোমা, সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২০৭টি ড্রোন গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
যে এলাকায় বিমানটি পাঠানো হয়েছিল, সেখানে রাশিয়ার এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু সম্ভবত সে তথ্য ইউক্রেনের গোয়েন্দাদের জানা ছিল না।
এর ফলে প্রশ্ন উঠছে—যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ন্যাটো কি যথাযথ গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করেনি? অন্যদিকে, ইউক্রেনের এফ-১৬ বিমানের খুচরা যন্ত্রাংশের সংকট, পাইলট সংকট এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
বর্তমানে ইউক্রেনের হাতে খুবই সীমিতসংখ্যক কার্যকর এফ-১৬ রয়েছে—সব মিলিয়ে ১৬টির বেশি নয়। তার মধ্যেও কেবল ৬ থেকে আটটি যুদ্ধের উপযোগী অবস্থায় রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এমএইচডি/এমজে