ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ২০ শাওয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গাজায় আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত, এখনো বন্ধ ত্রাণ সরবরাহ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
গাজায় আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত, এখনো বন্ধ ত্রাণ সরবরাহ ফাইল ছবি

গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের বুধবার ভোর থেকে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। গাজার মেডিকেল গুলোর সূত্রে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

সাম্প্রতিক ঘণ্টাগুলোতে আরও ভয়াবহ হামলার খবর আসছে বিধ্বস্ত এই উপত্যকা থেকে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে আল জাজিরা জানায়, বুধবার ভোর থেকে গাজায় সামরিক তৎপরতায় আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি ঘটেছে। আকাশজুড়ে ড্রোনের গম্ভীর গর্জন যেন যুদ্ধের অমোঘ উপস্থিতি জানান দিচ্ছে।

ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনুস শহরের অস্থায়ী তাঁবুগুলোর ওপর ধারাবাহিক বিমান হামলা চালিয়েছে, যেখানে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে জড়ো হয়েছিলেন হাজারো বেসামরিক মানুষ। একই সঙ্গে দেইর আল-বালাহ এলাকায় সাধারণ মানুষের সমাবেশেও আঘাত হানা হয়েছে। গাজার উত্তরের দিক থেকেও আরও ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের খবর মিলছে।

পূর্ব গাজায় রাতভর গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে। উজ্জ্বল ফ্লেয়ার ছুড়ে আকাশ আলোকিত করে ইসরায়েলি স্থলবাহিনী নিজেদের অভিযান চালানোর জন্য স্পষ্ট দৃশ্যমানতা নিশ্চিত করেছে বলে জানা গেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেওয়ার পর থেকে গাজায় আরও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নতুন করে বাস্তুচ্যুত বা দ্বিতীয়বারের মতো উচ্ছেদ হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৫১,০২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ১১৬,৪৩২ জন।

যদিও গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ৬১,৭০০ জনেরও বেশি হতে পারে। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে থাকা হাজার হাজার মানুষের আর কোনো খোঁজ না পাওয়ায় তাদের মৃত ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে গাজায় এখনো বন্ধ রয়েছে ত্রাণ সরবরাহ। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধ রাখা তাদের 'সুস্পষ্ট নীতির' অংশ এবং এটি হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার একটি 'হাতিয়ার' হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এদিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা  গাজার পরিস্থিতি নিয়ে যে সর্বশেষ তথ্য দিয়েছে, তা এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর ক্রমবর্ধমান হামলা ও সব ধরনের সহায়তা আটকে দেওয়ার কারণে সেখানে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সহায়তা ও জরুরি পণ্য প্রবেশ বন্ধ রাখার কারণে খাদ্য গ্রহণের অবস্থা মারাত্মকভাবে খারাপ হয়ে পড়েছে, যা সাত সপ্তাহ ধরে চলছে। সংস্থাটি বলছে, মার্চ মাসে গাজায় ৩,৬৯৬ জন শিশু তীব্র অপুষ্টির কারণে চিকিৎসা নিয়েছে, যেখানে ফেব্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ২,০২৭ জন — অর্থাৎ মাত্র এক মাসে অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা দ্বিগুণের কাছাকাছি বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।