ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প বললেন আলোচনা চলছে, চীন বলছে ‘ভুয়া খবর’ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
ট্রাম্প বললেন আলোচনা চলছে, চীন বলছে ‘ভুয়া খবর’  ডোনাল্ড ট্রাম্প ও গুয়ো জিয়াকুন

উচ্চ শুল্ক ইস্যুকে ঘিরে বাণিজ্য বিষয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের ‘সক্রিয়ভাবে’ আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার রাতে এ দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্পের বক্তব্যে কয়েক ঘণ্টা পর বেইজিং জানালো ভিন্ন কথা। ট্রাম্পের বক্তব্যের বিরোধিতা করে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন এটিকে ‘ভুয়া খবর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। গুয়ো বলেছেন, উভয় পক্ষ শুল্ক নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি।

গুয়ো জিয়াকুন বলেন, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কসংক্রান্ত সমাধান নিয়ে কোনো কথা হয়নি। এই শুল্কযুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র শুরু করেছে। এটা যদি অবশ্যম্ভাবী হয়, তা হলে আমরা লড়ব। যুক্তরাষ্ট্র কথা বলতে চাইলে আমাদের দরজা খোলা। সেই আলোচনা হতে হবে সাম্য, সম্মান এবং পারস্পরিক লাভের ভিত্তিতে।  

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, দুই দেশের আলোচনা সংক্রান্ত খবরের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।  

তবে ট্রাম্প তার দাবিতে অটল। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, দুই দেশের প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার সকালেই বৈঠক করেছেন। প্রতিনিধিদের পরিচয় জানতে চাইলে, ট্রাম্প কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।

চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ আরও তীব্র হয়। চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্কারোপসহ অন্যান্য পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

শুল্কনীতি নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের এ যুদ্ধকে ‘মোরগ লড়াই’ বলে অভিহিত করেছেন এমআইটির বৈশ্বিক অর্থনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ইয়াশেং হুয়াং।

চীনের এমন বক্তব্যের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিসরে ফের জটিলতা বাড়বে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কারোপের ঘোষণার পর পরই বিশ্ববাজারে ব্যাপক প্রভাবে। বিভিন্ন দেশে শেয়ারবাজার ধস নামে। পরে বিভিন্ন দেশের আবেদনের মধ্যেই চীন বাদে বাকি সব দেশের পারস্পরিক শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।  

গত মঙ্গলবার ট্রাম্পের কথায় মনে হয়েছিল, শুল্কযুদ্ধের সমাধানের প্রশ্নে নরম হচ্ছেন তিনি। আগের অবস্থান পাল্টে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘চীনের ওপর পাল্টা শুল্ক যথেষ্ট পরিমাণে কমবে। তবে সেটা ‘শূন্য’ হবে না। ’

পরদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেছিলেন, চীনা সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার প্রশাসন যোগাযোগ রাখছেন। সেই ইঙ্গিতের ওপরে ভিত্তি করে গতকাল সারা বিশ্বের শেয়ারবাজার চাঙা হয়ে ওঠে।  

কিন্তু চীনের বক্তব্যের পর সংশ্লিষ্ট মহলের শঙ্কা, শুল্ক সমাধানের আশায় প্রাণ ফিরে পাওয়া বাজার এবার কোন পথে পা বাড়ায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। লগ্নিকারীদের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সময় এখনও আসেনি।

এদিকে শুক্রবার ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট দাবি করেছেন, ভারতের সঙ্গে প্রথম বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে তাদের। ভারতের শুল্ক খুব উঁচু নয়। অন্যান্য বাধাও কম। সরকারি ভর্তুকিও বেশি নয়। ফলে তাদের সঙ্গে চুক্তি করা অপেক্ষাকৃত সহজ।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক, কলোরাডো, অ্যারিজোনা, ইলিনয়সহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১২টি প্রদেশ। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ‘বেআইনি’। যা অর্থ ব্যবস্থাকে সমস্যায় ফেলেছে। ফলে ঘরে-বাইরে চাপ বাড়ছে ট্রাম্পের ওপরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।