ইরান সম্প্রতি ‘কাসিম বাসির’ নামের একটি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র জনসমক্ষে এনেছে, যা উন্নত দিকনির্দেশনা প্রযুক্তি ও জটিল গতিপথ পরিবর্তনের ক্ষমতা দিয়ে সজ্জিত। এই ক্ষেপণাস্ত্র শত্রুপক্ষের যে কোনো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ জানান, এটি অত্যন্ত নির্ভুলভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে, ইলেকট্রনিক হস্তক্ষেপ মোকাবিলা করতে পারে এবং রাডারে ধরা পড়ে না।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, কাসিম বাসির ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে ইরান দুটি বড় সামরিক অভিযানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। একযোগে ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এর পাঁচটিও ঠেকাতে পারবে না বলেও দাবি করা হয়েছে।
গতকাল রোববার (৪ মে) ইয়েমেনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইরানকে দায়ী করে কড়া হুঁশিয়ারি দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানান, উপযুক্ত সময়ে এই হামলার জবাব দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ইরানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইরানের ওপর কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে, তার জবাবে তেহরান কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি স্পষ্ট করে দেন, ইরান আক্রমণের মুখে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও টার্গেট করতে কোনো দ্বিধা করবে না।
মার্কিন কর্মকর্তাদের হুমকির জবাবে নাসিরজাদেহ বলেন, আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চাই এবং তাদের আমাদের ভাই বলেই বিবেচনা করি। তবে যদি তাদের ভূমি থেকে আমাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়, তাহলে সেই দেশের ভেতরে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও আমরা আমাদের বৈধ লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করব।
ইসরায়েলের অনলাইন সংবাদমাধ্যম ওয়ালার তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সূত্রগুলো বলছে, বর্তমানে ইরানের হাতে রয়েছে প্রায় ২ হাজার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আঘাত হানতে সক্ষম।
এমন প্রেক্ষাপটে, ২৫ এপ্রিল ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এমন কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি তিনি মেনে নেবেন না, যেখানে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। অথচ মার্কিন প্রশাসনের তরফ থেকে তখন বলা হয়, তারা ইরানকে সীমিতভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে নিষেধ করবে না।
এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আবারও নতুন করে সামরিক সংঘাতের শঙ্কা বাড়ছে।
এসএস/এমজে