মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই সমস্যার একটি ‘সমাধান’ বের করতে তিনি উভয় দেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার কয়েক দিন পরই এ প্রস্তাব দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রোববার নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লেখেন, “আমি আপনাদের দুই দেশের সঙ্গে কাজ করব, দেখতে চাই কাশ্মীর নিয়ে ‘হাজার বছরের’ বিরোধের একটা সমাধান করা যায় কি না। ”
তবে ভারত ও পাকিস্তান হাজার বছর ধরে এই অঞ্চলে লড়াই করছে—ট্রাম্পের এই দাবি সঠিক নয়।
মুসলিম-অধ্যুষিত কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধ শুরু হয় ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের বিভাজনের পর। দুই দেশই পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের দাবি করে, যদিও তারা কেবল কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই অঞ্চল নিয়ে তারা ইতোমধ্যে তিনটি যুদ্ধ করেছে।
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে বহু বছর ধরে চলছে সশস্ত্র আন্দোলন—কেউ চায় স্বাধীনতা, কেউ বা চায় পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে। এই বিদ্রোহ দমনে ভারত মোতায়েন করেছে প্রায় সাত লাখ সেনা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার বরাবরই আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার বিরোধী। ২০১৯ সালে তার সরকার কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের অধিকার বাতিল করে দেয়, যা কাশ্মীরিদের মধ্যে আরও অসন্তোষের জন্ম দেয়।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানায়, ট্রাম্পের আগ্রহকে তারা স্বাগত জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, “কাশ্মীর ইস্যুর স্থায়ী ও ন্যায়সঙ্গত সমাধান অবশ্যই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী হতে হবে এবং কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ”
ভারতের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে দেশটির গণমাধ্যমগুলো সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির বাইরে অন্য কোনো আলোচনায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
শনিবার ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে খবরটি প্রথম প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই তার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।
রোববার তিনি আবারও দাবি করেন, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি তার সহায়তায় সম্ভব হয়েছে। ট্রাম্প লেখেন, “এই ঐতিহাসিক ও সাহসী সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা করতে পারায় আমি গর্বিত”।
তিনি আরও লেখেন, “যদিও বিষয়টি আলোচনায় আসেনি, তবুও আমি এই দুই মহান দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছি। ”
এমজেএফ