ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ জুলাই ২০২৫, ২৬ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

গাজায় স্কুলে ইসরায়েলি নৃশংস বোমা হামলা, নিহত ২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:২৭, মে ২৬, ২০২৫
গাজায় স্কুলে ইসরায়েলি নৃশংস বোমা হামলা, নিহত ২৫ ছবি: আল জাজিরা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ২৫ জন নিহত হয়েছেন।

 স্কুলটি একটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। স্কুলটিতে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।

নিহতদের মধ্যে দুইজন রেডক্রস কর্মী এবং এক সাংবাদিকও রয়েছেন।  

সোমবার (২৬ মে) কাতারের সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।  

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী আবারও ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। উপত্যকাটির একটি স্কুলে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুজন রেড ক্রস কর্মী, এক সাংবাদিক এবং একাধিক শিশু। নিহতদের মধ্যে ১১ বছর বয়সী গাজার কনিষ্ঠতম সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ইয়াকিন হাম্মাদও রয়েছে।  

এদিকে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের ২০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি সম্মেলন বসেছে।  সেখানে স্পেন আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা।

পৃথক প্রতিবেদনে আল জাজিরা বলছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১২ জনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপাশি হাজার হাজার শিশু চরম অপুষ্টির শিকার হয়ে মৃত্যু ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।

সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।

এর আগে রোববার (২৫ মে) গাজায় মোহাম্মদ ইয়াসিন নামে চার বছর বয়সী এক শিশু না খেতে পেয়ে মারা যায়।

গাজায় সম্প্রতি অনাহারে মারা যাওয়া অসংখ্য শিশুর মধ্যে সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করল ওই শিশুটি।

এদিকে বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে এক সপ্তাহেই প্রাণ গেল প্রায় ৬শ জনের। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে একটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবুতে হামলায় এক মা ও তার সন্তানরা নিহত হয়।

এ ছাড়া খান ইউনিসের পূর্বে বানি সুহেইলায় আরেক শিশুর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা, ওই শিশুর পরিবারকে লক্ষ্য করে চালানো হয় ড্রোন হামলা। উত্তর গাজার জাবালিয়ায় আরেকটি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন দুই নারী ও এক শিশু।  এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া আলাদা হামলায় নিহত হয়েছে ইয়াকিন হাম্মাদ। তিনি ১১ বছর বয়সেই গাজার জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তারকা। নিহত হয়েছে ডাক্তার আলা আমির আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই। একমাত্র জীবিত সন্তান ১১ বছর বয়সী আদম এখনও আইসিইউতে।

প্রায় তিন মাস ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করেছে, অল্প সময়ের মধ্যেই হাজার হাজার শিশু অনাহারে মারা যেতে পারে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ইসরায়েলের ১৯ মাসের হামলায় এখন পর্যন্ত যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়, তাদের মধ্যে ৩১ শতাংশই শিশু।  

এ হিসাব শুধু শনাক্তকৃত মৃতদের নিয়ে, বহু মৃত্যুর তথ্য এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল বারবার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে শিশুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে, শিশু মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।