যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি মেরিন ব্যাটালিয়ন পাঠাচ্ছে পেন্টাগন। অভিবাসনবিরোধী আইন প্রয়োগের প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ মোকাবিলায় এটি বড় ধরনের এক উত্তরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল ভবন ও কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৭০০ মেরিন সেনা সক্রিয় করা হচ্ছে। এর একদিন আগেই ট্রাম্প সেখানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন।
পরে পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানান, অতিরিক্ত ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্যও মোতায়েন করা হবে।
তবে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার রাজ্য প্রশাসন। গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ইতোমধ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, মেরিন সেনা সক্রিয় করার উদ্দেশ্য হলো নেতৃত্বাধীন ফেডারেল সংস্থার সহায়তায় টানা নজরদারি নিশ্চিত করা।
রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, সেনারা কেবল ন্যাশনাল গার্ড ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহায়তায় কাজ করবেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প এখনো ১৮০৭ সালের ইনস্যারেকশন অ্যাক্ট (সেনাবাহিনীকে অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলায় ব্যবহারের আইন) প্রয়োগের পথে হাঁটেননি।
এর আগে এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে মেরিন পাঠানোর বিষয়টি তিনি বিবেচনা করছেন। তবে বিক্ষোভ পরিস্থিতি ‘সঠিক দিকে যাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি রব রেনল্ডস জানান, সোমবার শহরের কেন্দ্রস্থলে ইউনিয়ন গোষ্ঠীগুলোর আয়োজিত বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। তিনি বলেন, রোববার মোতায়েন হওয়া ন্যাশনাল গার্ড কেবল ফেডারেল ভবন পাহারায় ছিল এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কোনো সংঘাতে জড়ায়নি।
তারা কেবল সামরিক পোশাক পরে দাঁড়িয়ে ছিল, বাস্তবে কিছুই করেনি, বলেন রেনল্ডস।
তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল গার্ড একটি রাজ্যভিত্তিক বাহিনী, যার সদস্যরা সাধারণত খণ্ডকালীন। কিন্তু মেরিনরা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আক্রমণাত্মক সামরিক শাখা। তাদের সাধারণত বিদেশে পাঠানো হয়, নিজ দেশের শহরে নয়।
এদিকে গভর্নর নিউসমের দপ্তর জানিয়েছে, তাদের কাছে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, মেরিনরা এখনো লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় নামেনি, কেবল নিকটবর্তী ঘাঁটিতে অবস্থান করছে।
গভর্নরের দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের সামরিক উত্তরণ অপ্রয়োজনীয়, অনুচিত এবং নজিরবিহীন— যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দক্ষ সামরিক শাখাকে নিজ দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে নামানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এমজে