ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত আরও ১০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৫৯, আগস্ট ১৪, ২০২৫
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত আরও ১০০ গাজায় এভাবেই ত্রাণ সংগ্রহ চলে

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল সূত্র এমনটি জানিয়েছে।

 

আল জাজিরার মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছেন ৬১ জন। উত্তরাঞ্চলে হামলা তীব্রতর হয়েছে।

বুধবার গাজা নগরীর উত্তরে ত্রাণ বিতরণে সহায়তাকারী কয়েকটি দলের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন।  

নাসের হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রাফাহর উত্তরে ত্রাণকেন্দ্রে খাবারের জন্য অপেক্ষমাণদের ওপর গুলি চালিয়ে অন্তত ১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে।  

গাজার জরুরি ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা সংস্থার হিসাবে, উত্তরাঞ্চলে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় আরও ১৪ জন নিহত ও ১১৩ জন আহত হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত আট জন, যাদের মধ্যে ৩ শিশু রয়েছে, প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৫ জনে, যার মধ্যে ১০৬ জন শিশু।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানান, বোমাবর্ষণ ও বিমান হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত বা আহত হয়েছে, অন্তত ১৭ হাজার শিশু পরিবারহীন বা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে এবং ১০ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ও গভীরভাবে ট্রমাগ্রস্ত।

মৃত্যুর সংখ্যা ও অবরোধের প্রভাব ক্রমেই বাড়তে থাকায় বুধবার হামাসের একটি প্রতিনিধি দল সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য মিসরে পৌঁছায়।  

গত জুলাইয়ে কাতারে হওয়া পরোক্ষ আলোচনা ব্যর্থ হয়েছিল। হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধ বন্ধ, ত্রাণ পৌঁছানো ও গাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের বিষয়গুলো আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে।

একজন হামাস কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, তারা গাজার শাসন একটি নিরপেক্ষ কমিটির হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত, তবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে অস্ত্র সমর্পণ করবে না। অপরদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, হামাস সম্পূর্ণ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।

গাজা নগরী দখলের ইসরায়েলি পরিকল্পনা

গত তিন দিনে গাজা সিটির অন্যতম বৃহৎ এলাকা জয়তুনে ৩০০টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।  

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা সত্ত্বেও ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখল ও কয়েক লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের চিফ অব স্টাফ এয়াল জামির নতুন অভিযানের প্রধান কাঠামো অনুমোদন করেছেন এবং সেনা প্রস্তুতি, রিজার্ভ আহ্বান ও প্রশিক্ষণ জোরদারের ওপর জোর দিয়েছেন।

আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, ইসরায়েলি বাহিনী এখন গাজা সিটিতে পূর্ণাঙ্গ অভিযানের প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং জয়তুন ও আশপাশের এলাকায় রাতভর গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালিয়েছে। সেখানকার শেখ রাদওয়ান এলাকায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।

উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিং এখন ফিলিস্তিনিদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে জানান মাহমুদ। সীমিতসংখ্যক ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করলেও সেখানে গুলিবর্ষণ ও পদদলিত হয়ে প্রাণহানি ঘটছে।

তার ভাষায়, কিছু ত্রাণ ঢোকার অনুমতি দিয়ে ইসরায়েল মিডিয়ায় দেখাতে চাইছে যে খাবার আসছে। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত— প্রতিদিনই অনাহারে আরও মানুষ মারা যাচ্ছে।  

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।