ঢাকা: ভারতের উত্তর প্রদেশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা নদীতে ভেসে উঠছে একের পর এক মৃতদেহ। বুধবার সকাল পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৮০টি মৃতদেহ।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে উত্তর প্রদেশে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। মৃতদেহের সংখ্যা শতাধিক হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উত্তর প্রদেশের উন্নাওয়ের জেলাশাসক সৌম্য অগ্রবাল।
প্রশাসন সূত্রে খবর, কানপুর ও উন্নাওয়ের মাঝে সফিপুরে গঙ্গার পরিয়ার ঘাটে মঙ্গলবার বেশ কিছু দেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়। ওই দিন প্রায় ৩০টি দেহ উদ্ধার করা হয়। দেহগুলি পচে-গলে এমন বিকৃত আকার নিয়েছে যে, উদ্ধারকর্মীরা আর তা উদ্ধার করতে চাইছেন না। ইতোমধ্যেই দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য উত্তর প্রদেশের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বিজেপি নেতারা। তাঁরা দেহগুলো ময়নাতদন্তের দাবি করেন। কিন্তু দেহগুলিতে পচন এবং বিকৃতি দেখা দেওয়ায় ময়নাতদন্ত করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান গীতা যাদব। তিনি জানান, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা ফরেন্সিক দফতরে পাঠানো হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের আইজি সতীশ গণেশ জানিয়েছেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গিয়েছে এই এলাকায় মৃত্যুর পর অবিবাহিত মহিলাদের দেহ শেষকৃত্যের বদলে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। কাজেই প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, এগুলো সেই ভাসিয়ে দেওয়া দেহই। কিন্তু পচন ও বিকৃতির ফলে দেহগুলো আদৌ মহিলাদের কি না তা বোঝার উপায় নেই। শনাক্ত করার একমাত্র উপায় ডিএনএ পরীক্ষা বলে জানিয়েছেন আইজি।
একসঙ্গে এতগুলো মৃতদেহ ভেসে ওঠায় অস্বস্তি বেড়েছে অখিলেশ যাদব সরকারের। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কোনও অপরাধজনিত কারণে এই মৃত্যু কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে গত বছরের জুলাইতে গঙ্গা সংস্কার ও পরিষ্কার রাখতে নতুন দফতর গঠন করেছে মোদী সরকার। বাজেটে এ জন্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে কেন্দ্র। তার পরেও এমন ঘটনা ঘটায় ক্ষুব্ধ পরিবেশবিদরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গঙ্গায় দেহ ভাসিয়ে দেওয়ার এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রতিবাদ করছেন। প্রশাসনকেও তাঁরা সে কথা জানিয়েছেন, কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫