ঢাকা: চুরি যাওয়া গৌতম বুদ্ধের এক মূর্তির ‘এক্স-রে’ পরীক্ষায় খুঁজে পাওয়া গেল এর ভেতর থাকা হাজার বছরের প্রাচীন এক সন্ন্যাসীর মমি করা মৃতদেহ।
চীনের একটি মন্দির থেকে চুরি যাওয়ার পর মূর্তিটিকে বিক্রির জন্য নেয়া হয় নেদারল্যান্ডে।
ছবিতে দেখা যায়, কাপড়ে জড়ানো এক সন্ন্যাসী বুদ্ধের মতো বসে আছেন মূর্তির ভেতরে। ধারণা করা হচ্ছে, হাজার বছর আগে ওই সন্ন্যাসী স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণের আগে তার দেহটি মমি করার বিষয়টি নিশ্চিত করে যান। সে সময় জাপান, চীন এবং থাইল্যান্ডের স্থানীয় ধর্মবিশ্বাসে মৃত্যুর পরবর্তী জীবন নির্ধারনে এই প্রথা প্রচলিত ছিল।
তবে এভাবে মমিকরণের পদ্ধতিটি বেশ সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টকর ছিল ওই সময়। বিশেষ খাদ্য গ্রহণ ও বিষাক্ত চা পান করে সন্ন্যাসীরা স্বেচ্ছায় মৃত্যুর পথ বেছে নিতেন।
এতে দেহ এমনভাবে বিষাক্ত হয়ে উঠতো যে পোকামাকড় এমনকি যেকোনো প্রকার জীবাণুও এড়িয়ে চলতো ওই মৃতদেহ। ফলে দেহ হয়ে উঠতো পচনরোধী। তবে মাত্র অল্প কিছু সংখ্যক সন্ন্যাসীই সফলভাবে এই পদ্ধতিতে নিজেদের দেহকে মমিতে রুপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য পরবর্তীকালে মানুষের মাঝে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে ওঠেন তারা।
নেদারল্যান্ডের ওই জাদুঘরের পুরতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক ভিনসেন্ট ভ্যান ভিলস্টেরেন বলেন, আমরা ধারণা করছি, হাজার বছর আগে সন্ন্যাসীর মৃত্যুর পরবর্তী দু’শ বছর এই মমিটি চীনের কোনো বৌদ্ধ মন্দিরে উপাসনার জন্য রাখা ছিলো। চতুর্দশ শতাব্দীতে মমিটিকে মূর্তির ভেতরে প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়।
এ ব্যাপারে আরও তথ্য পেতে বর্তমানে মমিটির ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন ভিনসেন্ট এবং তার দল। এতে মমিটির আসল পরিচয় জানার পাশাপাশি চীনে এর প্রকৃত ঠিকানায় একে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
বর্তমানে মূর্তিটি বুদাপেস্টে ইতিহাসভিত্তিক জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে এবং আন্তর্জাতিক সফরের অংশ হিসাবে আগামী মে মাসে এটি লুক্সেমবার্গে পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৫