ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পরিচ্ছন্ন ও সবুজ সিঙ্গাপুরের জনক লি কুয়ান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৫
পরিচ্ছন্ন ও সবুজ সিঙ্গাপুরের জনক লি কুয়ান

ঢাকা: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ক্ষুদ্র নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ না থাকলেও দূরদর্শী চিন্তা আর পরিকল্পনায় ‘পরিচ্ছন্ন ও সবুজ’ তকমা সিঙ্গাপুরের আগে যুক্ত করে দিয়েছেন সাগরঘেরা দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠাতা সদ্যপ্রয়াত লি কুয়ান ইউ।



এক সময় এশিয়ার অন্যতম ধনী দেশ মালয়েশিয়ার শাসনাধীনে থাকলেও ১৯৬৫ সালের ৯ আগস্ট পৃথক হয়ে যায়। আর এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল লি কুয়ান ইউয়ের।

কৃত্রিম শহর দেশ সিঙ্গাপুরে প্রাকৃতিক বলতে শান্ত-সমাহিত সমুদ্রটাই শুধু। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় লি কুয়ান দেশটিকে বিশ্বের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত করেন। যা পর্যটনের জন্য বিখ্যাত।

সিঙ্গাপুরের উন্নয়ন ‘কারিগর’ লি কুয়ান ইউ ৯১ বছর বয়সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৩ মার্চ) মারা গেছেন।

তার মৃত্যুতে সিঙ্গাপুরের জনগণের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। যার আভা ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক বিশ্বেও।

১৯২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জন্ম নেওয়া লি কুয়ান যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ থেকে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন।

এরপর দেশে ফিরে পিপলস অ্যাকশন পার্টি (পিএপি) প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘদিন দলের সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন আধুনিক সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা।

১৯৫১ সালের ৪ জুলাই শহরে’র মর্যাদা পাওয়ার পর ১৯৫৯ সালের ৩ জুন ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় সিঙ্গাপুর। এরপর ১৯৬৩ সালে ৩১ আগস্ট স্বাধীনতা ঘোষণার পর একই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার সঙ্গে একীভূত হয়।

১৯৬৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় পিএপি। আর প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেন লি কুয়ান ইউ।

৩১ বছর ধরে ওই পদে বেশ সফলতার সঙ্গে সিঙ্গাপুরকে বিশ্ব দরবারে এক অলৌকিক উন্নয়নে ভরে দেন তিনি। একসময়ের জেলেপাড়া দারিদ্র্য পীড়িত সিঙ্গাপুরকে এশিয়ার ‘সুপার অর্থনীতি’তে পরিণত করেন।

পরিকল্পিত সংস্কার এবং উগ্র জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন লি কুয়ান ইউ। শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করতে দেশটির জনগণও তাকে সহযোগিতা করেন।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্নোগ্রাফির পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে চুইংগাম ও দেয়াল লিখন নিষিদ্ধ করা হয়। অপরাধ ও দুর্নীতিও শক্ত হাতে নিমূর্ল করেন লি কুয়ান।

তার প্রচেষ্টা আর পরিকল্পনায় সিঙ্গাপুর বিশ্ব বিনিয়োগের নিরাপদ তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগ করছেন। রয়েছে বহুদেশীয় নাগরিক।

তবে কোনো কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য নাগরিকদের কাছে বেশ সমালোচিত হন উন্নয়নের রূপকার লি কুয়ান ইউ।

তার বিরুদ্ধে ‘একনায়কতন্ত্রে’র মতোও অভিযোগ আনা হয়। তবে এসব উড়িয়ে দিয়ে লি কুয়ান বলতেন, দেশের উন্নয়নের জন্য এটা জরুরি। রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য কিছু স্বাধীনতা ত্যাগ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।