ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কিরগিজস্তানে দাঙ্গা পরিস্থিতি ভয়াবহ

নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১০০, চরম মানবিক বিপর্যয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১০

ওশ: কিরগিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ওশ-এ উজবেক ও কিরগিজদের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ১০০জনে  দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ১ হাজারেরও বেশি।

গত ১০ জুন শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ এখনো পর্যন্ত চলছে।  

উজবেক বংশো™ভ’ত হাজার হাজার নাগরিক এখনো শহর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালাচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সশস্ত্র কিরগিজ পুরুষরা উজবেকদেরকে গুলি করছে এবং তাদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ওমুরবেক সুভানালিয়েভ বলেন, “এটি একটি সত্যিকারের যুদ্ধ। রাস্তায় মানুষের লাশ পরে আছে আর সবকিছুই জ্বলছে। ”

আহতদের অনেককেই উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

অন্তবর্তকালীন প্রেসিডেন্ট রোজা ওতুমবায়েভা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাঁর সরকারের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে কর্তৃপক্ষ ওশ্ শহরে জরুরি অবস্থা জারি করে এবং হেলিকপ্টার, সামরিক যানসহ কয়েক হাজার নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করে। গত শনিবার কর্তৃপক্ষ ওস্ শহরে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ জারি করে। তাসত্ত্বেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায়, সরকার শনিবার রাশিয়াকে সেনা পাঠানোর অনুরোধ জানায়। তবে রাশিয়া এ সহিংসতাকে কিরগিজস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে উল্লেখ করে এতে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ক্রেমলিনের  মুখপাত্র নাতালিয়া তিমাকোভা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করার জন্য এবং মানবিক রশদ পাঠানোর জন্য রাশিয়া একটি বিমান পাঠাবে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েরই দেশটিতে বিমান ঘাঁটি রয়েছে।

ওশ্ শহর থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে সহিংসতার বিস্তার ঘটার কারণে সরকার পুরো জালালাবাদ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। জালালাবাদের একজন অধিবাসী জানান, সারা শহরজুড়েই সহিংসতা ঘটে চলেছে।

বিশেষজ্ঞরা কিরগিজস্তানের পরিস্থিতিতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন । তাঁরা বলছেন,আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া গৃহযুদ্ধ ঠেকানো এবং শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

ওশ শহর কিরগিজস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট কারমানবেক বাকিয়েভের শক্ত ঘাঁটি। গত ৭ এপ্রিল বাকিয়েভকে ক্ষমতাচ্যুত করার সময় সরকার এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৮৫ জন নিহত হয়েছিলেন। এই ঘটনার পর বাকিয়েভ তার পরিবারসহ বেলারুশে এ পালিয়ে যান।

এদিকে খাদ্য, পানীয়সহ সবধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাব, চরম অরাজকতা, নিরাপত্তাহীনতা ও ব্যাপক সহিংসতা সহ সবকিছু মিলিয়ে দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১০০৩ঘন্টা, ১৩জুন, ২০১০
এসআইএস/ডিসি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।