ঢাকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৫ সালের এই দিনে জাপানের নাগাসাকি শহরে ‘ফ্যাটম্যান’ নামক একটি আণবিক বোমা হামলা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মানব ইতিহাসের ন্যক্কারজনক এ হামলায় প্রাণ হারান ৭০ হাজারের বেশি মানুষ।
প্রতিবছরের মতো রোববার (৯ আগস্ট) নাগাসাকি পিস পার্কে অনুষ্ঠিত হলো আণবিক বোমা বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণ অনুষ্ঠান। বিস্ফোরণের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২ মিনিটে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয় প্রাণদানকারীদের।
এ স্মরণ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৭৫টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। স্মরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তৃতায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে বলেন, জাপান একটি পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত পৃথিবী বিনির্মাণের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এরপর শান্তি ঘোষণা পাঠ করেন নাগাসাকির মেয়র তমিহিসা তাউ এবং স্মৃতিচারণ করেন নাগাসাকি হামলায় বেঁচে যাওয়া ৮৬ বছর বয়সী সুমিতেরু তানিগুচি।
নাগাসাকির এ স্মরণ অনুষ্ঠানে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, অবশ্যই নাগাসাকি শেষ ঘটনা। এরপর পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার আর সহ্য করা হবে না।
জাপানের আরেক শহর হিরোশিমায় ‘লিটলবয়’ নামক আণবিক বোমাটি বিস্ফোরণের তিনদিন পর নাগাসাকিতেও হামলা করা হয়। জানা যায়, মূল লক্ষ্য ককুরা শহর মেঘে অস্পষ্ট হওয়ায় পরিকল্পনা বদলে নাগাসাকিতে হামলা করা হয়।
হিরোশিমায় আণবিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ছিল পৃথিবীতে আণবিক বোমা হামলার প্রথম ঘটনা। বিস্ফোরণের সময় বিস্ফোরণস্থল ও এর আশপাশের এলাকার তাপমাত্রা চার হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা ইস্পাত গলিয়ে ফেলতে সক্ষম। ইতিহাসের ভয়াবহতম এ হামলায় প্রাণ হারান এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ।
হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আণবিক বোমা বিস্ফোরণের ফলাফল ছিল আরও ভয়াবহ ও দীর্ঘমেয়াদি। হামলার অনেক বছর পরেও বোমার তেজষ্ক্রিয়তার প্রভাবে ক্যান্সার ও নানাবিধ রোগে অকালমৃত্যু হয়েছে অনেকের। অপুষ্টি আক্রান্ত অবিকশিত শিশুর জন্ম হয়েছে। যারা বেঁচে গিয়েছিলেন তারাও বিকৃত চেহারা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেছেন। অভিশাপ দিয়ে গেছেন হানাহানি আর যুদ্ধের খলনায়কদের।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৫
এসইউ/