ঢাকা: মিশরের সিনাই উপত্যকায় ২২৪ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত রুশ প্লেনটি বাইরের কোনো প্রভাবেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বলে দাবি করেছেন কোগালিমাভিয়া এয়ারলাইন্সের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে বিধ্বস্ত হয় প্লেনটি।
৭কে৯২৬৮ ফ্লাইটটি মিশরের লোহিত সাগর উপকূলের পর্যটন শহর শার্ম আল-শেইখ থেকে বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ৫১ মিনিটে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের উদ্দেশে উড়াল দেয়। উড্ডয়নের ২৩ মিনিট পর ১০টা ১৪ মিনিটে সিনাই উপদ্বীপে পৌঁছালে এটি সংশ্লিষ্ট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। পরে সিনাইয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্লেনটি সেখানকার পার্বত্য এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছানোর কথা ছিল এর।
মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে কোগালিমাভিয়া এয়ারলাইন্সের উপ-পরিচালক আলেক্সান্ডার মিরনভ দাবি করেন, মধ্য আকাশে এমন একটি দুর্ঘটনার একমাত্র ব্যাখ্যা হতে পারে বাইরের কোনো প্রভাব। এ প্রভাব যান্ত্রিক বা কিছু দিয়ে আঘাতজনিতও হতে পারে। এছাড়া আর কোনো ব্যাখ্যাই যৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে না।
তবে এখনই বিষয়টি মানতে নারাজ তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে রুশ সরকারের কর্তাব্যক্তিরাও ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তার দাবি আমলে নিচ্ছেন না। বিধ্বস্ত প্লেনটির ব্ল্যাকবক্স এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একটি রুশ টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল সংস্থার প্রধান আলেক্সান্ডার নেরাদকো বলেছেন, তদন্ত শেষের আগেই এমন মন্তব্য অবিবেচকের মতো হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জেমস ক্ল্যাপারও বলেছেন, প্লেনটিকে গুলি করে বা অন্য কোনো উপায়ে বিধ্বস্ত করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত এমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে এর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
কোগালিমাভিয়ার অপর এক কর্মকর্তাও জানিয়েছেন, ২০০১ সালে উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হওয়া প্লেনটির লেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে তা মেরামত করা হয়। তবে এ ঘটনা এবারের ট্রাজেডির কারণ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
প্লেনটির নিহত কো-পাইলটের স্ত্রী রাশিয়ান একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে জানিয়েছেন, তার স্বামী বেশ কয়েকবার এয়ারক্রাফটটির কারিগরি ত্রুটির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলেন।
এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই দুর্ঘটনাকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ উল্লেখ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৫
আরএইচ