ঢাকা: পাঞ্জাবের পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জেইশ-ই-মোহম্মদই হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। আর এ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সংগঠনটির প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহার নিজে।
সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (০৮ জানুয়ারি) এসব তথ্য জানানো হয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে।
গত ০২ জানুয়ারি স্থানীয় সময় ভোররাত সাড়ে তিনটার (বাংলাদেশ সময় ভোররাত চারটা) দিকে একদল বন্দুকধারী পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়।
জঙ্গিরা যে পাকিস্তানের নাগরিক, তার শক্ত প্রমাণ মিলেছে মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড থেকে। ওই ফোন থেকে পাকিস্তানের দু’টি নম্বরে কথা বলেছে জঙ্গিরা। পাকিস্তানি ফোন নম্বর দুটির একটি এক জঙ্গির মায়ের, আর অপরটি তাদের নিয়ন্ত্রকের।
পাঠানকোট হামলায় চার সন্দেহভাজন পৃষ্ঠপোষকের নামও পাকিস্তানকে জানিয়েছে ভারত। এরা হলেন, জেইশ-ই-মোহম্মদের প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারের ভাই আব্দুল রউফ আসগর, আশফাক আহমেদ, হাজি আব্দুল শাকুর ও কাশিম জান।
এদিকে, আরও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। তারা বলছেন, পাঠানকোটে হামলাকারীদের দলটি এতো ছোট নয়। আরও কয়েকজন হামলাকারী হয়তো আত্মগোপনে রয়েছে।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আমাদের শঙ্কা হচ্ছে, বাকি হামলাকারীরা হয়তো দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসে আমাদের আরও সাবধান থাকতে হবে।
আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করবে ভারত।
ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও বলেছেন, দিল্লি পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থাকে এরই মধ্যে আমরা সাবধান করে দিয়েছি। এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ভারত সফরে এলে যে পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তার মতোই হবে ২৬ জানুয়ারির নিরাপত্তা।
এদিকে, পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে দুই সন্দেহভাজনকে খুঁজছে পুলিশ। এই দুই সন্দেহভাজন সেনা পোশাকে থাকলেও সেনাবাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ করছিলো বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গুরুদাসপুরের তিবরি এলাকার বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী লাভপ্রীতি সিং স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (০৭ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তিবরি সেতুর ধারে তাকে থামিয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান জানতে চায় ওই দুই সন্দেহভাজন।
লাভপ্রীতি সিং আরও জানান, দুই সন্দেহভাজন সিআরপিএফ ও সেনাদের মতো পোশাকে ছিলেন। লম্বা জ্যাকেট আর কেমোফ্লেজ পেন্ট পরা ছিল তাদের। আর কোমরে ম্যাগজিন গোঁজা ছিল বলেও দেখেছেন লাভপ্রীতি।
এর আগে গুরুদাসপুরের পান্ধেরের দুই বাসিন্দা গ্রামের আঁখের ক্ষেতের আশেপাশে সেনা পোশাক পরা দুই সন্দেহভাজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। তবে পুলিশ এখনও এমন কোনো সন্দেহভাজনকে আটক করতে পারেনি বলে জানানো হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৬
আরএইচ