ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সিরিয়ায় লড়তে সেনা মোতায়েন শুরু সৌদির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
সিরিয়ায় লড়তে সেনা মোতায়েন শুরু সৌদির ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: রাশিয়ার সবরকমের হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে সিরিয়ায় অভিযান চালাতে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে সৌদি আরব। ইতোমধ্যে সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি ইনকিরলিকে সেনা ও যুদ্ধবিমান পাঠানো শুরু করেছে তারা।



সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইনকিরলিক সামরিক ঘাঁটিতে বেশ কিছু সৈন্য ও যুদ্ধবিমান পাঠানো হচ্ছে সৌদির পক্ষ থেকে। যদিও সৈন্য বা যুদ্ধবিমানের সংখ্যা জানায়নি কেউ। তবে, রাজকীয় সৌদি বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান এফ-১৬ শনিবার সকালে ইনকিরলিকে যাচ্ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা।

সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সম্প্রতি সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার ক’দিন আগে এই কথা জানালো সংবাদমাধ্যম।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভুসোগলু তার দেশের সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দমনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সৌদি। এজন্য তারা (সিরিয়ায়) যুদ্ধবিমান ও সেনা পাঠানোর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, মিত্রদের প্রতিটি বৈঠকে আমরা আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিস্তৃত ও ফলপ্রসূ কৌশলের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছি। যদি আমরা এমন কোনো কৌশল নিই, তাহলে তুরস্ক ও সৌদি আরব ভূখণ্ড থেকে অচিরেই যৌথভাবে স্থল অভিযান শুরু করতে পারে।

এদিকে, শনিবারই জার্মান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেন, রাশিয়ার সহযোগিতা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে বাশার আল-আসাদকে ধরে রাখতে পারবে না। ভবিষ্যতে আর কোনো আসাদ থাকবে না।

সংবাদমাধ্যম চলছে, মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি গোষ্ঠীর ‘ভ্যানগার্ড’ দাবিদার সৌদি এই যুদ্ধের ময়দানে নেমে গেলে তুরস্ক ও তৎসংলগ্ন সিরিয়ান এলাকায় নতুন সমস্যা দেখা দিতে পারে কুর্দি বিদ্রোহীদের নিয়ে। এই বিদ্রোহীরা আইএসের বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াইয়ে রয়েছে সেখানে। কিন্তু সৌদি তাদের সন্ত্রাসী হিসেবেই দেখে। কুর্দিদের নিশ্চিহ্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তুরস্কের সঙ্গে এই সৌদি যদি এক হয়ে মাঠে নামে, তবে যুদ্ধের ময়দানে নতুন ছকই কষা লাগবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদির সেনা মোতায়েনের কথা জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা মস্কো-আঙ্কারা সম্পর্কে আরও বেশি টানাপোড়েন লাগার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আইএস দমন অভিযানের নামে সিরিয়ায় যে হামলা চালাচ্ছে, তার মাত্র ১২ শতাংশই জঙ্গিদের স্থাপনায় আঘাত করছে। বাকিটা যে আসাদকে সহায়তার জন্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাশিয়ার এই তৎপরতা থামাবে কে?

আইএস দমন ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সম্প্রতি রিয়াদের পক্ষ থেকে স্থল সৈন্য পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হলে তার সমালোচনা করে মস্কো। বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জার্মান একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি সিরিয়ায় স্থল সৈন্য পাঠানো হয় (সৌদির পক্ষ থেকে), তবে বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে।

মেদভেদেভের এই হুঁশিয়ারির মধ্যেই রিয়াদ-আঙ্কারার পক্ষ থেকে শনিবার এই ঘোষণা দেওয়া হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬/আপডেট ১৬৫২ ঘণ্টা/আপডেট ১৭৩৯ ঘণ্টা
এইচএ/আরআই

** বিশ্বযুদ্ধের হুমকি রাশিয়ার

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।