ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আমার’

সজিব তৌহিদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৬
‘ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আমার’ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: গোটা ব্রিটেন জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের লেবার পার্টির সদস্য (এমপি) জো কক্স হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে। গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় লিডস শহরের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের ব্রিস্টলে একটি লাইব্রেরির কাছে রাস্তায় ৫২ বছর বয়সী এক বন্দুকধারীর গুলিতে ও পরে ছুরিকাঘাতে লেবার পার্টির নির্বাচিত সদস্য জো কক্স নিহত হন।

ডানে জো কক্স এবং বাঁয়ে তার সহকারী ফ্যাজিলা অ্যাসোয়াত

দিনের আলোতে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। হত্যার সময় জো কক্সের সহকারী ফ্যাজিলা অ্যাসোয়াত তার সঙ্গে ছিলেন। আকস্মিকভাবে ওই বন্দুকধারী জো কক্সকে গুলি করে, পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে উপর্য‍ুপরি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় একব্যক্তি বন্দুকধারীর দিকে এগিয়ে গেলে তাদের মধ্যে ধ্বস্ত‍াধ্বস্তির ঘটনাও ঘটে।

ওই বন্দুকধারী কক্সের মথায় পর-পর দু’টি গুলি করে। কিছুক্ষণ পর তৃতীয় গুলিটি করে। গুলির সঙ্গে-সঙ্গে জো কক্স সড়কে লুটিয়ে পড়েন। পরক্ষণেই ফ্যাজিলা অ্যাসোয়াত রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ধরে হাসপাতালে নিতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন।

একদিকে, জো কক্স যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, অন্যদিকে তার দেহের রক্তে ফ্যাজিলার দুই বাহু ভিজে যাচ্ছে। সে এক ভয়ংকর বিভীষিকাময় মুহূর্ত। ফ্যাজিলা অ্যাসোয়াতের বাহুতে থাকা অবস্থায় নিস্তেজ হয়ে যাওয়া এবং যন্ত্রণায় ছটপট করা জো কক্স বলে উঠেন, ‘নিজেকে সামলাতে পাচ্ছি না, আমি ভীষণ কষ্টে আছি, আমার কষ্টটা ভীষণ...(‘I can’t make it, I’m in too much pain. My pain is too much)। পরক্ষণেই ফ্যাজিলার বাহুতেই জো কক্স শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়ার হলে তার মৃত্যুর বিষয়টি চিকিৎসক নিশ্চিত করেন। তাই সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে পৃথিবীতে ব্রিটিশ এমপি জো কক্সের শেষ বাক্য হচ্ছে- ‘মাই পেইন ইজ টুহ্‌ মাচ’।

সেই লোমহর্ষক ঘটনার কথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে প্রকাশ করেছেন ফ্যাজিলা অ্যাসোয়াত।

ফ্যাজিলা অ্যাসোয়াতের বাবা জানান, নৃশংস ওই ঘটনার সময় তার মেয়ে এমপি’র পাশে ছিলেন। তাকে বাঁচাতে তার মেয়ে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে তাকে বাঁচাতে পারেননি।

এদিকে, জো কক্স হত্যার একদিন পর শুক্রবার (১৭ জুন) প্রিয় স্ত্রীর সুখময় স্মতি মনে করে শোকার্ত স্বামী ব্রেডান তার ফেসবুকের প্রোফাইল ছবি পরিবতর্ন করেন। যে ছবিতে দুই সন্তানের সঙ্গে জিন্সের প্যান্ট, পায়ে বুট জুতা এবং গেঞ্জি গায়ে সবুজ অরণ্য দেখছেন জো কক্স।

এই হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক ওই বন্দুকধারী থমাস মায়ারকে শনিবার (১৮ জুন) ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করার কথা রয়েছে। জো কক্স হত্যাকাণ্ড ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি অভিযোগ আনার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

৪১ বছর বয়সী দুই সন্তানের জননী কক্স ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হন। তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সিরিয়া বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি।

জো’র মৃত্যুতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের পাশাপাশি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন। এই ঘটনায় দেশটির স্পিকার ও লেবার পার্টি প্রধানকে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৬
টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।