ঢাকা: সামরিক বাহিনীর চলমান অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার মধ্যেই শনিবার (জুলাই ১৬) ভোরে ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক বিমানবন্দরে অবতরণ করলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসিপ তাইয়েপ এরদোগান।
বিমানবন্দরে নেমেই তিনি মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের।
এর আগে শুক্রবার (১৫ জুলাই) রাতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেয় তুরস্কের সামরিক বাহিনীর একটি গ্রুপ। এ সময় ইস্তাম্বুলের এশীয় ও ইউরোপীয় অংশের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী সেতুগুলো বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি সেনা সদস্যরা দখল করে নেয় সরকারি টেলিভিশন টিআরটিসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের অফিস। এছাড়া ট্যাংক মোতায়েন করা হয় ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার প্রধান প্রধান রাস্তায়। আঙ্কারায় পার্লামেন্ট ভবন লক্ষ্য করেও গোলাবর্ষণের খবর দেয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
তবে অভ্যুত্থান প্রতিরোধে দ্রুত পাল্টা ব্যবস্থা নেয় তুরস্কের একে পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন সরকার সমর্থকরা। অনেক স্থানেই অভ্যুত্থানকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন সরকার সমর্থিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
অাঙ্কারায় তুর্কি পুলিশের বিশেষ বাহিনীর হেডকোয়ার্টারে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে হামলা চালায় অভ্যুত্থান সমর্থকরা। এ সময় নিহত হন ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা। সরকার সমর্থক এফ-১৬ জঙ্গি বিমানের পাল্টা হামলায় ভূপাতিত হয় অভ্যুত্থান সমর্থক একটি হেলিকপ্টার। এর মধ্যেই সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দেয় তুরস্কের ক্ষমতাশালী জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটি। এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে অভ্যুত্থানকারীদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বেনআলি ইলদিরিম।
এদিকে অভ্যুত্থানের সময় প্রেসিডেন্ট এরদোগান ছুটি কাটাচ্ছিলেন অবকাশ যাপন কেন্দ্র মারমারিসে। সেখান থেকে দ্রুত তিনি প্রধান নগরী ইস্তাম্বুলে ফিরে আসেন। এছাড়া রাস্তায় নেমে এই অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ জানাতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এই ডাকে সাড়া দিয়ে শনিবার ভোরে ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাতে জড়ো হয় হাজার হাজার সমর্থক। সমর্থক পরিবেষ্টিত এরদোগান আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তিনি ইস্তাম্বুল ছেড়ে কোথাও যাবেন না। অভ্যুত্থানের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত বিতর্কিত ধর্মগুরু ফেতুল্লাহ গুলেন সমর্থিত গুলেন নেটওয়ার্ককে দায়ী করেন। পাশাপাশি যে বা যারা এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইস্তাম্বুল ও রাজধানী আঙ্কারার বিভিন্ন স্থানে রাজপথে নেমে এসেছেন এরদোগান সমর্থকরা। তবে এখনও বিভিন্ন স্থান থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। এছাড়া বেশ কিছু জায়গায় অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর অভ্যুত্থান সমর্থক সেনারা গুলি চালিয়েছে বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
আরআই
আরও পড়ুন-
অভ্যুত্থানের মধ্যেই ইস্তাম্বুল ফিরলেন এরদোগান
‘অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়েছে’ দাবি তুর্কি প্রধানমন্ত্রীর
অভুত্থান ব্যর্থ করার দাবি তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থার
তুরস্কে অভ্যুত্থানকারীদের হামলায় ১৭ পুলিশ নিহত
তুরস্কে ‘সেনা অভ্যুত্থান’ চেষ্টা!