ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

৯/১১, শুধু নিরাপরাধ প্রাণই নয় হারিয়ে গেছে বহু গুরুত্বপূর্ণ দলিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১১
৯/১১, শুধু নিরাপরাধ প্রাণই নয় হারিয়ে গেছে বহু গুরুত্বপূর্ণ দলিল

ঢাকা: একুশ শতকে বিশ্ববাসীর জন্য ভয়াবহতম দিনটি নিঃসন্দেহে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। এ দিনে প্রায় ৩ হাজার নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

কিন্তু সেই সঙ্গে যে ঐতিহাসিক ও দুর্লভ কিছু দলিলও হারিয়ে গেছে তার খবর সম্ভবত কেউ এতোদিন রাখেননি।

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে গেছে অথবা আগুনে পুড়ে ভষ্ম হয়ে গেছে হাজার হাজার গুরুত্বপূর্ণ নথি, শিল্পকর্ম যা বহুদিনের ইতিহাসের একমাত্র সাক্ষি।

হারিয়ে বা ধ্বংস হয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক বস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে, আমেরিকার কিংবদন্তিতুল্য অন্ধ নারী হেলেন কিলারের লেখা, প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ৪০ হাজার ছবির নেগেটিভ যা তার ব্যক্তি ফটোগ্রাফার দিয়ে তোলা, আলেকজান্ডার কালদের ও অগাস্তে রুদিনের হাতে গড়া কিছু ভাস্কর্য। আরও ছিল ১৯২১ সালের একটি চুক্তি যার ভিত্তিতে একটি সংস্থা বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ভবনটি নির্মাণ করে।

ইতিহাসের ওই ভয়াবহ ট্রাডেজির এক দশক পরে বিভিন্ন সংস্থা এবং সংগ্রাহকরা বলছেন, তারা এখনো নিশ্চিত নন ঠিক কী পরিমাণ ঐতিহাসিক নিদর্শন হারিয়ে গেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের দলিল রচনা প্রকল্পের সহ-সভাপতি এবং নিউইয়র্ক স্টেট আর্কাইভসের পরিচালক ক্যাথলিন ডি রো বলেন, ‘ছবিগুলো আর ফিরিয়ে পাওয়া যাবে না কারণ এর গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো হারিয়ে গেছে। আর এ কারণেই আপনি কখনোই জানতে পারবেন না সম্পূর্ণ ছবিগুলো দেখতে কেমন ছিল। ’

ট্রেড সেন্টার কমপ্লেক্সটি ছিল ৭টি ভবন বিশিষ্ট। হামলার পর টুইন টাওয়ার অন্য ভবনগুলোর ওপর ভেঙে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি ছোট আকারের অফিস ভবন, ম্যারিয়ট হোটেল এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অফিস। এদিনই বিকেলে আবার বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে হামলা হয়।

বাণিজ্য কেন্দ্রটির আশাপাশে ল ফার্ম, ম্যানুফেকচারার এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ ৪৩০টির বেশি নানা কোম্পানি ছিল। এখানে জার্নাল অব কমার্সসহ ২১টি লাইব্রেরি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আরও ছিল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ বহু সরকারি সংস্থা।

বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের ২৬ তলায় সিআইএ’র একটি গোপন কার্যালয় ছিল। এখান থেকে শহরে জরুরি নির্দেশনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গোপন অভিযান পরিচালনার জন্যও একটি কেন্দ্র ছিল এটি।

এই ভবনেই ছিল ক্যান্টর ফিটজেরাল্ড নিলামঘর। এখানে কর্মরত ৬৫০ জন কর্মচারী সেদিন নিহত হন। তাদের সংগ্রহে ছিল দুর্লভ কিছু চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্য।

বাণিজ্য কেন্দ্রের ছয় নম্বর ভবনে ছিল মার্কিন কাস্টমস সার্ভিসের ফার্দিনান্দ গ্যালোজ্জি লাইব্রেরি। ১৮৪০ সালের আগে থেকে সে সময় পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের যতো ধরনের বাণিজ্য হয়েছে তার সম্পর্কিত দলিল-প্রমাণ এখানে ছিল।

কেনেডির ছবির নেগেটিভগুলো ছিল ৫নং ভবনে। এই ভবনে হেলেন কিলারের মাত্র দু’টি বই অবশ্য বেঁচে গেছে।

৯/১১ এ আমেরিকান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট-৭৭ এর বিমানটি পেন্টাগনের উপর বিধ্বস্ত হলে বহুসখ্যক গোপনীয় নথি পত্র হারিয়ে গেছে।

নিউইয়র্কে সিআইএ এবং গোপন গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা বাণিজ্য কেন্দ্রের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে স্ট্যাটেন দ্বীপে নিয়েছেন। এই ধ্বংসাবশেষের মধ্যে অনেক নথি, গোপন তথ্য সম্বলিত কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভ রয়েছে। তবে সিআইএ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।