ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বিশ্বের সবচে উঁচু ভবন বানাবে বিন লাদেন গ্রুপ!

জাহাঙ্গীর আলম, আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১১
বিশ্বের সবচে উঁচু ভবন বানাবে বিন লাদেন গ্রুপ!

ঢাকা: বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবনটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে ওসামা বিন লাদেনের পারিবারিক কোম্পানি বিন লাদেন গ্রুপ। সৌদি আরবের রাজকীয় গৃহনির্মাণ কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ ভবন নির্মাণ করবে ওই প্রতিষ্ঠান।


 
রাজধানী রিয়াদে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি যুবরাজ প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালাল ঘোষণা দেন, তার মালিকানাধীন কিংডম হোল্ডিংয়ের একটি প্রতিষ্ঠান বিন লাদেন গ্রুপের সঙ্গে ১২৩ কোটি ডলারের একটি চুক্তিতে সই করেছে। এই চুক্তির ভিত্তিতে তারা যৌথ উদ্যোগে লোহিত সাগরের তীরবর্তী বন্দরশহর জেদ্দায় একটি আকাশচুম্বি ভবন নির্মাণ করবে।

তিনি আরও জানান, এই ভবনটিই হবে বিশ্বের সবচে বেশি উচ্চতার। ভবনটির নাম নির্ধারণ করা হয়েছে কিংডম টাওয়ার। এর উচ্চতা হবে ৩ হাজার ২৮১ ফুটেরও বেশি যা বর্তমান উচ্চতম ভবন দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার চেয়ে ৫৬৮ ফুট বেশি উঁচু। এর আয়তন ধরা হয়েছে ৬০ লাখ বর্গফুট, এতে চলন্ত সিঁড়ি থাকবে ৫৯টি এগুলোর মধ্যে কোন কোনটির গতি হবে প্রতি সেকেন্ডে চলবে ৩৩ ফুট।

কিংডম টাওয়ারে আরও থাকবে ফোর সিজন হোটেল, বিলাসবহুল কনডোমিনিয়াম এবং অফিসকক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে যুবরাজ আল ওয়ালিদ বলেন, এই ভবনটির নির্মাণের উদ্দেশ্য, তেল সমৃদ্ধ সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সামর্থ্যের বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পাঠানো।

তবে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপ আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এমন একটি উদ্যোগ কী ধরনের বার্তা দেবে?

২০০২ সালে বার্তা সংস্থা এএফপিতে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, জেদ্দাভিত্তিক সৌদি বিন লাদেন গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন ওসামা বিল লাদেনের বাবা মোহাম্মদ। ১৯৩০ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত এ কোম্পানিটি পরে বহুজাতিক বৃহৎ করপোরেশনে পরিণত হয়। সৌদি রাজ পরিবার মক্কা, মদিনাসহ দেশটির বেশিরভাগ অবকাঠামো নির্মাণের কাজ দেয় একে।

মোহাম্মদের ৫৪ সন্তানের মধ্যে অনেকে সরাসরি এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন আবার অনেকে শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। তবে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে অনেক দূরত্ব বজায় রেখে চলেন তারা।
 
অবশ্য জীবনের প্রথম দিকে সৌদি আরবের অনেক রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে বাবা মোহাম্মদকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন বিন লাদেন।

১৯৯৪ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে তাকে অভিযুক্ত করা হলে এবং সৌদি সরকারও তার ওপর নাখোশ হলে তিনি নিজেই সৌদি নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেন।

১৯৯৯ সালে কোম্পানিটির অনেক শাখা প্রতিষ্ঠানের নাম পর্যন্ত পরিবর্তন করা হয়। এর মধ্যে বিন লাদেন টেলিকমিউনিকেশনের নাম পরিবর্তন করে বাউদ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি নামকরণ করা একটি। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হিসেবে মোস্ট ওয়ান্টেড ওসামা বনি লাদেনের সঙ্গে যে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা এড়াতে এ কাজ করা হয়।

তবে যাই হোক বিল লাদেন গ্রুপের সহযোগিতায় নির্মিতব্য কিংডম টাওয়ারের নকশা এরই মধ্যে হয়ে গেছে। নকশা করেছে শিকাগো ভিত্তিক অ্যাড্রিয়ান স্মিথ অ্যান্ড গর্ডন গিল আর্কিটেকচার। নকশাটি বুধবার প্রকাশও করা হয়েছে।
এই কোম্পানিটি বুর্জ খলিফার নকশাও করেছে।

ভবনটি মরুভূমির একটি বৃক্ষের আকৃতিতে নির্মাণ করা হবে। তবে ঠিক কোন বৃক্ষ তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। নির্মাণে সময় লাগতে পারে কয়েক বছর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।